ব্রাশ করুন নিয়মিত। লম্বা এবং ভালো চুল বানাতে যে নিয়ম গুলি মেনে চলবেন

ঘন কালো লম্বা চুল চান অনেকেই। আর তাই দ্রুত লম্বা চুল পাওয়ার জন্য অনেকেই নানা রকম বাজার চলতি প্রডাক্ট ব্যবহার করেন চুলে।তবে শুধু চুল লম্বা হলেই তো আর হলো না!লম্বা চুলের দরকার অত্যন্ত যত্নও। ঠিক মত যত্ন না নেওয়া হলে চুল বড় হওয়ার সাথে সাথে চুল পড়াও যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি চুল ও হয়ে যায় শুষ্ক ও রুক্ষ ।তবে বাড়িতেই সামান্য কয়েকটি নির্দেশ মেনে চুলের যত্ন নিলেই আপনার চুল থাকবে সুন্দর ও উজ্জ্বল

আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক লম্বা চুলের যত্ন নেবেন কিভাবে

1)ট্রিম করতে হবে নিয়মিত

দ্রুত লম্বা চুল পাওয়ার জন্য অনেকেই চুল কাটা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেন। তবে এটা কিন্তু একদমই ঠিক নয় ।চুল বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে চুলের আগা ফেটে যেতে পারে ।এর ফলে চুল হয়ে যায় রুক্ষ এবং চুলের বৃদ্ধিও কমে যায় অনেকটাই।তাই প্রতি 10 থেকে 12 সপ্তাহ পর পর সামান্য হলেও চুল ট্রিম করা অত্যন্ত জরুরি।বিশেষত আপনার চুলে যদি রং করা বা স্ট্রেটনিং করা থাকে তাহলে আট সপ্তাহ পরে চুল অবশ্যই ট্রিম করিয়ে নিতে হবে আপনাকে ।

2)জট ছাড়ান

আপনার চুল যত লম্বা হবে ততই চুলে জট পড়ার পরিমাণ ও বাড়বে।নিয়মিত স্নান করার পরে চুলের জট যদি না ছাড়ান তা থেকে চুল হতে পারে ক্ষতিগ্রস্থ। অনেকে ব্যস্ততার ফলে তাড়াহুড়োয় চুল ভেজা থাকা অবস্থাতেই চুল আঁচড়াতে থাকেন। এতে চুলে জট পড়ে এবং চুল উঠতে শুরু করে। তাই চুল শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তারপরেই  চিরুনি দিয়ে আস্তে আস্তে ছাড়িয়ে নিন জট। এতে চুল থাকবে ভালো।

3)ব্রাশ করুন নিয়মিত

চুল তাড়াতাড়ি বড় করতে চাইলে বা সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল লম্বা চুল পেতে চাইলে নিয়মিত সুন্দর ভাবে ব্রাশ করা অত্যন্ত জরুরি ।সঠিক ব্রাশের সাহায্যে নিয়মিত চুল আঁচড়ালে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং চুলের স্বাস্থ্য ও থাকে ভালো ।তবে অনেকে খুব তাড়াতাড়ি ব্রাশ করতে গিয়ে চুলের গোড়ায় টান দিয়ে ফেলেন। ভুলেও এটি করবেন না। খেয়াল রাখবেন চুল আঁচড়ানোর সময় চুলের গোড়া যেন কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় ।

4)ঘন ঘন শ্যাম্পু করবেন না

চুল ভালোভাবে পরিষ্কার রাখা অবশ্যই জরুরি ।তবে অনেকেই প্রত্যেকদিন শ্যাম্পু করেন।এই ঘন ঘন শ্যাম্পু করার অভ্যাস যদি আপনার থাকে তবে অবিলম্বে তা ত্যাগ করুন। নিয়মিত শ্যাম্পু করলে চুল হয়ে ওঠে শুষ্ক ও রুক্ষ এর ফলে চুলের বৃদ্ধিও বাধাপ্রাপ্ত হয় ।শ্যাম্পু করা যদি একান্তই জরুরী হয় তাহলে তিনদিন পর পর করুন শ্যাম্পু আর যেকোনো কেমিক্যাল মিশ্রিত শ্যাম্পু বর্জন করে ভেষজ শ্যাম্পু ব্যবহার শুরু করুন ।

5)কন্ডিশনার ব্যবহার করা চাই নিয়মিত

লম্বা চুলের যত্ন নিতে চাইলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। শ্যাম্পু ব্যবহার করলে তা চুলের ময়লা দূর করে ঠিকই তবে তার সাথেই এটি চুলকে করে তোলে রুক্ষ ।আর এই রুক্ষ চুলের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে দরকার কন্ডিশনার।তবে বাজার চলতি কন্ডিশনার ব্যবহার না করে তার বদলে বাড়িতেই পেঁয়াজ, মেথি প্রভৃতি দিয়ে উপাদান দিয়ে ঘরোয়া কন্ডিশনার বানিয়ে নিতে পারেন। এতে চুল হবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে সেইসাথে চুলের বৃদ্ধি ও হবে দ্রুত।

6)তেল এর ব্যবহার

লম্বা চুলের যত্নের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো চুলে তেলের ব্যবহার ।নিয়মিত চুলে তেল লাগাতে যদি ভালো না লাগে তাহলে চেষ্টা করবেন সপ্তাহে অন্তত একবার ও যেন চুলে তেল লাগান। চুলে তেল লাগানোর আগে তেল হালকা গরম করে নিয়ে তারপর চুলের আগা থেকে গোড়া অবদি  তা ভালো করে লাগিয়ে গরম তোয়ালে বা শাওয়ার ক্যাপ পরে ঢেকে নিন চুল।এর এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন চুল।দেখবেন চুল হয়ে উঠবে নরম ও মসৃণ।চাইলে শ্যাম্পু করার আগের দিন রাতে ও তেল লাগিয়ে রাখতে পারেন মাথায় ।

7)সব সময় বেঁধে রাখবেন না চুল

লম্বা চুল সহজে ম্যানেজ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হল চুল বেঁধে রাখা। অনেকেই তাই সর্বক্ষণ চুল খোঁপা করে রাখেন বা শক্ত করে চুলে ঝুঁটি বেঁধে থাকেন। তবে টেনে টেনে খোপা করলে বা শক্তভাবে চুল বাঁধলে চুল হয় ক্ষতিগ্রস্থ। সেইসঙ্গে সর্বক্ষণ চুল যদি থাকে বাধা তবে চুলের গোড়ায় জমে ঘাম। এর থেকে চুল ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ।তাই চুল বাঁধলে দিনে কিছুটা সময় ফ্যানের তলায় দাঁড়িয়ে বা প্রাকৃতিক হাওয়াতে চুল শুকিয়ে নিতে ভুলবেন না অবশ্যই এবং চুল বাধার সময় খেয়াল রাখবেন যাতে বেশি চাপ না পড়ে চুলের গোড়ায় ।

8)হেয়ার মাস্ক ব্যবহার

লম্বা চুলের সঠিকভাবে যত্ন নিতে চাইলে শুধুমাত্র শ্যাম্পু, কন্ডিশনার বা তেলের ব্যবহারে যথেষ্ট নয় সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার চুলে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি  হেয়ার মাস্ক চুলকে করে তোলে রেশমী ও সুন্দর ।তবে, বাজার থেকে এটি কেনার কোন দরকার নেই ।বাড়িতে ভেষজ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই নিতে পারেন চুলের যত্ন। মধু,লেবু ,কলা, দুধ পেঁয়াজের রস প্রভৃতি চুলকে করে তোলে সুন্দর ও উজ্জ্বল ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *