নিউজ ডেস্কঃ রাম হলেন ভগবান বিষ্ণুর সপ্তম অবতার যাকে পুরুষোত্তম বলা হয়।আর সেই ভগবান বিষ্ণুর অবতারের নাকি মৃত্যু ঘটেছিল।প্রশ্ন হল কিভাবে হয়েছিল ভগবান রামচন্দ্রের মৃত্যু ? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকের কাছেই অজানা।তাহলে জেনে নেওয়া যাক ভগবান রামচন্দ্রের কিভাবে মৃত্যু হয়েছিল।
রামায়ণে উল্লেখ আছে রামচন্দ্রের মৃত্যুর কথা। রামচন্দ্র তার ১১ হাজার বছর শাসনকালে বহু যজ্ঞ করেন।আর সেই সুবিশাল রাম রাজত্বের বহু অংশ শাসনভার পান রামচন্দ্র এবং তার ভাইয়ের পুত্রেরা। সীতাদেবী ফিরে যায় তার মা পৃথিবীর কাছে।তারপরেই রামচন্দ্রও বুঝতে পারেন যে মর্তলোকের কাজ তার শেষ হয়েছে। এইবার তার দেবলোকে ফিরে যাওয়ার সময়।
পদ্ম পুরাণ অনুযায়ী, একদিন একজন ঋষি রামের কাছে আসেন। রামচন্দ্রকে বলেন যে তার সাথে তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত কথা আছে যাতে সেই সময় কেউ যেন তার ঘরে প্রবেশ না করে। সেইমতো রাম লক্ষণকে পাহারায় রাখেন এবং তার সাথে নির্দেশ দেন যে কেউ যদি ঘরে ঢোকে তাহলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে।তারপর রামচন্দ্র ঘরে ঢুকে জানতে পারেন যে সেই ঋষি আসলে সময়ের দেবতা কালদেব।আর সেই সময়ই দরজার বাইরে এসে উপস্থিত হন ঋষি দুর্বাসা। কিন্তু লক্ষন ঋষি দুর্বাসাকে ঢুকতে বাধা দেন। যার ফলে ঋষি দুর্বাসা ক্রুধ হয়ে রঘুবংশ এবং অয্যোধ্যাকে অভিশাপ দিতে চান। তখন লক্ষণ সবাই কে বাঁচাতে অভিশাপ নিজের ঘাড়ে নিয়ে নেন।এবং তিনি অনুভব করেন যে এই পরিস্থিতি আসলে কালের খেলা তার চলে যাওয়ার সময় এসেছে। তারপর লক্ষণ চলে যান সরযূ নদীর তীরে এবং যেখানেই বিলীন হয়ে যান । ভগবান রাম এই বিষয়টি জানতে পারেন যে লক্ষণ তার ভ্রাতাকে বাঁচানোর জন্য দুর্বাসার অভিশাপ নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিয়েছেন।এতে রামচন্দ্র কষ্টে সরযূ নদীর তীরে যান এবং সেখানে গিয়ে তিনিও বিলীন হয়ে যান।
রামায়ণের আরেকটি সূত্র বর্ণিত আছে যে ভগবান রামচন্দ্রের বুঝতে পারেন যে তার মর্তের কাজ শেষ করে এবার তার সুরলোকের ফিরে যাওয়ার সময় চলে এসেছে।তাই তিনি যমরাজের অপেক্ষা করতে থাকে কিন্তু যেহেতু অযোধ্যার দ্বারে পাহাড়ায় ছিলেন স্বয়ং হনুমান। তার ফলে যমরাজ হনুমানের ভয়ের ঢুকতে পারছিলেন না।এই বিষয়টি জানতে পেরে ভগবান রামচন্দ্র নিজের আংটি ফেলে দেন প্রাসাদের একটি পাথরের খাজে।এবং হনুমানকে নির্দেশ দেন যে ওই আংটিকে খুঁজে আনতে। হনুমান তখন সেই আংটিকে খুঁজতে ফাঁকা দিয়ে গলে যায় এবং পৌঁছে যায় নাগলোকে।সেখানে বাসুকি নাগ এর তার সঙ্গে সাক্ষাত হয়।এবং হনুমান বাসুকিকে বলেন যে তিনি রামের আংটি খুঁজতে এসেছে।এটি শুনে বাসুকি হনুমান দেখিয়ে দেন এক বিশাল আংটির পাহাড় সেখানে সবই রামের আংটি।এতে হনুমান বিভ্রান্ত হয়ে যান।তারপর বাসুকি নাগ হনুমান কে বোঝানো জন্ম-মৃত্যু চক্রের কথা।তারপরই হনুমান বুঝতে পারেন যে ভগবান রামচন্দ্রের বৈকুন্ঠে ফিরে যাওয়ার সময় চলে এসেছে।