কিডনির সমস্যার পাশাপাশি আর যে যে সমস্যা হতে পারে অতিরিক্ত লেবু খেলে

লেবু শরীরের জন্য ভালো একথা আমরা সকলেই জানি। লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বক যেমন রাখে ভালো তেমনই দাঁত ও হাড়ের জন্যও লেবু খুবই উপকারী। ওজন কমানোর জন্যও অনেকে সকাল বেলায় লেবুর জলের ওপরেই ভরসা রাখেন। তবে, যে ব্যাপারটা নিয়ে মানুষ বেশি মাথা ঘামায় না তা হলো অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। অন্য যেকোনো খাবারের মতোই অতিরিক্ত লেবু খাওয়াও কিন্তু ঠিক নয়।

অতিরিক্ত লেবু খেলে নানা ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে শরীরে, যেগুলো আমাদের অনেকের ই জানা নেই। আসুন আজ এ সম্পর্কেই জেনে নেওয়া যাক কিছু তথ্য।

১)বুকে জ্বালা ভাব

পরিমিত পরিমাণ লেবু খাওয়া যেমন শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী ঠিক তেমন ই, অতিরিক্ত লেবু খেলে অপরদিকে অ্যাসিডিটি, বুকে জ্বালা ধরা এবং এসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা তৈরি হয় শরীরে।লেবু খেয়ে যদি এরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রায়ই তবে, লেবু খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া উচিত।এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

২)কিডনির সমস্যা

লেবুর খোসার মধ্যে রয়েছে অক্সালেটেড নামক এক পদার্থ যা কিডনিতে ক্রিস্টাল বা পাথর তৈরি করতে পারে। সুতরাং, যাদের এই ধরনের সমস্যা রয়েছে, তাদের লেবু এড়িয়ে যাওয়ারই পরামর্শই দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

৩)দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যায়

অতিরিক্ত লেবু খেলে শরীরে যা যা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় তার মধ্যে অন্যতম হল দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া।অতিরিক্ত লেবু প্রতিদিন খেলে,দাঁতের উপর এক সাদা আস্তরণ পড়ে যায়, যা দাঁত এর জন্য অত্যন্ত খারাপ।সম্প্রতি ব্রাজিলের একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে সফ্ট ড্রিংক খেলে দাঁতের যে ধরনের সমস্যা হয় লেবুর থেকেও ঠিক একই ধরনের সমস্যা হয়।তবে, প্রত্যেকদিন লেবু খাওয়ার অভ্যাস থাকলে দিনে দুবার ব্রাশ করার মাধ্যমে দাঁতের এই সমস্যা বেশ কিছুটা রোধ করতে সক্ষম হবেন আপনি।

৪)পাকস্থলীর আলসার

লেবু আমাদের শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে ঠিক ই তবে,আলসারের সমস্যায় থাকলে লেবু এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।কারণ, লেবুর অ্যাসিডিক প্রকৃতি পাকস্থলীর জন্য খুব ই ক্ষতিকারক।এটি পাকস্থলীর আবরণকে ইরিটেট করে, যা থেকে আলসার তৈরি হতে পারে।

৫)মুখে ফোঁড়া বা ফুসকুড়ি

দীর্ঘদিন ধরে লেবু খেলে মুখে ফোঁড়া বা ফুসকুড়ি দেখা যায় অনেকের।এর মূল কারণ হলো দীর্ঘদিন ধরে লেবু খেলে মুখের মধ্যে থাকা নরম কোশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এক্ষেত্রে লেবু খাওয়া কদিন বন্ধ রাখাই ভালো।

৬)বমি ভাব

লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু তা বলে,অতিরিক্ত ভিটামিন সি কিন্তু ভালো নয়।অতিরিক্ত লেবু খেলে অনেকক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি ও বমি ভাব দেখা যেতে পারে।যা পরবর্তীকালে শরীরে গুরুতর সমস্যার ও সৃষ্টি করতে ‌পারে।

৭)সানবার্ন হয়

লেবু আমরা সকলেই কম বেশি খায়।তবে লেবুতে কিন্তু অনেকেরই অ্যালার্জি আছে।যা অনেকেই বুঝতে পারেন না।লেবু খেয়ে রোদে বেরোলে যদি স্কিনে লাল র‌্যাশ বা কালো ছোপ দেখা দেয় তাহলে বুঝবেন লেবু থেকেই অ্যালার্জিক রিয়াকশন দেখা দিচ্ছে শরীরে। লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিডের সঙ্গে সূর্যালোকের বিক্রিয়ায় এই সমস্যা দেখা যায়।এছাড়াও অতিরিক্ত লেবুর রস স্কিন ক্যানসার ডেকে আনে।

এই সমস্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন ১২০ মিলি লিটার এর বেশি লেবুর রস খাওয়া কখনোই উচিত নয়। এ ছাড়াও যেকোনো ধরনের অসুস্থতার সময় লেবুর রস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।লেবু খাওয়ার পর কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করলেই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *