নিউজ ডেস্কঃ রাবনের সীতা হরনের কথা জানেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল। আসলে ইতিহাস এমন ভাবেই লেখা হয়ে থাকে। এবং ইতিহাস যে একাধিক সময় বিকৃত করা হয়েছে তা একাধিক প্রমান পাওয়া গেছে। রাবণ। শব্দটি শুনলেই সবার আগে মাথায় আসে বিশালাকার এক দৈত্য, দশ মাথা যুক্ত। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন যে রাবনের আদৌ দশ মাথা ছিল কিনা! বা ধরুন রাবনের সন্তানদের কথা অনেকেই জানেন কিন্তু রাবনের স্ত্রী কে ছিলেন!
মন্দোদরী শব্দটির অর্থ কোমল উদর বিশিষ্টা। রামায়ণে সুন্দরী, ধর্মপ্রাণা ও নীতিপরায়ণা বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি পৌরাণিক “পঞ্চকন্যা”-র (পঞ্চসতী, যাঁদের নাম উচ্চারণ করলে পাপ দূর হয় বলে হিন্দুদের বিশ্বাস) অন্যতম।
মন্দোদরী ছিলেন অসুররাজ ময়াসুর ও অপ্সরা হেমার কন্যা সন্তান। মন্দোদরী এবং রাবনের তিন পুত্র ছিল: মেঘনাদ (ইন্দ্রজিৎ), অতিকায় ও অক্ষয়কুমার। মন্দোদরী দৈত্যবংশে জন্মগ্রহন করেন। পিতা দিতিপুত্র ময়দানব। স্বর্গের অপরূপা সুন্দরী অপ্সরা হেমার গর্ভ থেকেই জন্ম হয় মন্দোদরীর।
জন্মসূত্রে তিনি দানবী। প্রশ্ন হল মন্দোদরীর সাথে রাবনের সাক্ষাৎ কেমন করে হল? ভগিনী শূর্পণখাকে পাত্রস্থ করে রাবণ বনে শিকার করতে বেরিয়েছিলেন। সেইসময় তিনি কন্যাসহ দিতিপুত্র ময়দানবকে দেখেন।
দেখে রাবণ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি কে? নির্জন এই বনে আপনি একা কি করছেন? আপনার সঙ্গে ঐ সুন্দরী কন্যাই বা কে?’
ময়াসুর জানান যে দেবতারা তাঁকে হেমা নামে অপ্সরাকে পত্নীরূপে দান করেন। তার ভালোবাসার জন্য তিনি মায়াবলে এক সোনার নগর নির্মাণ করেছিলেন। দেবকার্যে হেমাকে একদিন স্বর্গে চলে যেতে হয়। তারপর ১৪ বছর কেটে গেলেও সে আর ফিরে আসেনি।তাই মনের কষ্টে আমি এই কন্যাকে নিয়ে নগর ছেড়ে বনে এসেছি। তাছাড়া এই কন্যার জন্য উপযুক্ত পাত্রের সন্ধান করছেন ময়াসুর।
এই পর্যন্ত বলে ময়াসুর রাবণকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমার কথা সব হল। এবার বলুন আপনি কে?’ রাবণ নিজ পরিচয় দিয়ে বলেন মহর্ষি বিশ্বশ্রবার পুত্র। তখন সানন্দে তাঁর হাতে কন্যা সম্প্রদান করতে ইচ্ছুক ময়াসুর।
এবং বলেন হে রাজন্, হেমানাম্নী অপ্সরার গর্ভে জাত মন্দোদরী নামে আমার এই কন্যাকে পত্নীরূপে গ্রহণ করুন। রাবণ, ‘তাই হোক’ বলে অগ্নিসাক্ষ্য করে মন্দোদরীর গ্রহন করেন।