ভয়ংকর প্রজাতির মাছ!

বাঙালির মৎস্য প্রীতির কথা অজানা নয় কারোরই। প্রত্যেকদিন খাবারের পাতে মাছ না থাকলে খাওয়া মুখ দিয়ে ওঠে না অনেকেরই। তা বলে সব প্রজাতির মাছ কিন্তু খাওয়ার যোগ্য নয়।আজ আপনাদের এমনই এক ভয়ংকর প্রজাতির কাছের কথা বলব যাকে খাওয়া তো দূর, স্পর্শ করলেই গলা সরিয়ে প্রলাইজড হয়ে যেতে পারে নিমেষে। শুনে অবাক হলেও এমন ভয়ংকর প্রজাতির মাছ কিন্তু সত্যি ই রয়েছে।

দেখতে অনেকটাই পাথরের মতো হওয়ায় এই মাছটির নাম হয়েছে পাথুরে মাছ(stone fish)। সমুদ্রের তলদেশে পাথরের মাঝে লুকিয়ে থাকা এই মাছকে এক ঝটকায় দেখে পাথর থেকে আলাদা করে চেনার উপায় প্রায় নেই বললেই চলে। আর অসাবধানতার বশে একবার যদি পা পরে এর গায়ে তবে আর রক্ষা নেই! আক্রান্ত ব্যক্তিদের মতে এর বিষক্রিয়া এতোটাই তীব্র যে,যন্ত্রণার চোটে দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নাকি কেটে ফেলতে ইচ্ছা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাছের মধ্যে এটিকেই প্রথম বলা চলে।

সমুদ্রের তলদেশে থাকা এই মাছের পিঠটি প্রায় ত্রিশ টি কাঁটাযুক্ত। একদিকে যেমন এর বিষাক্ত কাঁটা একে  হাঙ্গর ও অন্যান্য বড় মাছদের হাত থেকে রক্ষা করে, তেমনি একে পাথরের মত দেখতে হওয়ায় নানা রকমের পাথরের আড়ালে এই মাছ খুব সহজেই আত্মগোপন করতে পারে। পাথরের ছদ্মবেশ ধারণ করে সবার চোখকে ফাঁকি দেওয়ার এই প্রবনতার কারণে অনেকেই এই প্রানীকে ছদ্মবেশী বলে থাকে।

মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা মেলে এই মাছ।এছাড়াও ভারত মহাসাগর, লোহিত সাগরের অগভীর জলে প্রায় ই দেখা মেলে এদের। এই মাছের  দৈঘ্য প্রায় ৩০-৪০ সেন্টিমিটার এর মত হয় এবং এরা বাছে প্রায় ৫-১০ বছর।নানা প্রজাতির ছোট মাছ ও জলজ অমেরুদণ্ডী প্রাণী ই এদের প্রিয় খাবার।

পাথুরে এই মাছের গায়ে রয়েছে বিদ্যুৎ ও। ভুল করে পা ফেলার সাথে সাথেই এর কাটার ভয়ংকর বিষ ও ইলেকট্রিক শকে সাথে সাথেই শরীর হয়ে যেতে পারে প্যারালাইজড।এই কাঁটার আঘাতে আক্রান্তের হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা দ্রুত লোপ পায় এবং শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে ক্রমশ। আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দ্রুত না  হলে তাকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।অতএব এবার থেকে সমুদ্রে ঘুরতে গেলে আনন্দ তো করবেন ই সেই সঙ্গে সতর্কতা অবলম্বন করতেও ভুলবেন না যেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *