নিউজ ডেস্কঃ হায়দ্রাবাদে রামোজি ফিল্ম সিটি নাম জীবনে একবার না একবার আমরা সকলেই শুনেছি। আর তা হবে নাই বা কেন ,তেলেঙ্গানার অন্তর্গত এলাকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফিল্ম সিটি বলে পরিচিত যে। 6 বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত এই সিটি টি হায়দ্রাবাদ থেকে 25 কিলোমিটার দূরে 1966 সালে তৈরি হয় চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে। বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কান্নাড়া, মালায়ালাম কোন ভাষায় না তৈরি হয়েছে এখানে সিনেমা। সব মিলিয়ে সিনেমার সংখ্যাটা মোটামুটি ১২০০ তো হবেই। এমনকি হলিউডের বেশকিছু সিনেমার শুটিং ও হয়েছে এখানে। এখানে ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রেপ্লিকা তৈরি তো আছেই সেই সঙ্গে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয় বিশেষত, রাতের বেলায় উজ্জ্বল আলোতে যখনই ফিল্মসিটি আলোকিত হয় তখন যেন তার অপার্থিব সৌন্দর্য উন্মোচিত হয়।
এ তো গেল কেবল ফিল্ম সিটির ভালো দিক। এই আলোর আড়ালে কিন্তু রয়েছে অন্ধকার। নির্মাণের পর থেকেই বিভিন্ন ভৌতিক কাণ্ডকারখানা শুরু হয় বলে এই রামোজি ফিল্ম সিটির কুখ্যাতি আছে। দিনের বেলা যে ফিল্ম সিটির অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে বিমোহিত করবে রাতের বেলাতেই সেই একই জায়গায় আপনার শরীরে শিহরণের সৃষ্টি করবেন।
সবচেয়ে বেশি ভুতুড়ে কান্ড কারখানা কথা শোনা যায় ফিল্ম সিটির অন্তর্গত সিতারা হোটেলে। এই হোটেলের প্রত্যেকটির রুম বারান্দা ড্রেসিং টেবিল,ড্রয়িং রুম সমস্ত কে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন ভৌতিক কাহিনী।এখানকার আলো নাকি প্রায়ই নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায় আবার নিজে নিজে জ্বলে ওঠে,অনেক সময়ই বাটি হাতে পাহারাদারের আহত হন রহস্যজনকভাবে। এছাড়াও অবশিষ্ট খাবার যেখানে সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় মাঝে মাঝে।
তবে শুধু সিতারা হোটেলে নয় এই রামোজি ফিল্ম সিটি অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন হোটেলে কিন্তু এই ধরনের ভৌতিক কাণ্ডকারখানা কথা শুনতে পাওয়া যায়। এখানে থেকেছে এমন অনেকেই অশরীরী আত্মার দেখা পেয়েছেন এবং আবার অনেকেই নাকি রাতের বেলা শুনতে পেয়েছেন কেউ যেন তাদের দরজায় টোকা মারছে। কখনো জামা কাপড় নিজে নিজেই ছিড়ে যায় কখনো বা ওপর থেকে লাইট ভেঙে পড়ে। এই সমস্ত কারণে মাঝে মাঝে পত্রিকায় উঠে আসে রামোজি ফিল্ম সিটি কে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ভৌতিক কাহিনী।
কিন্তু কেন এমনটা হয় সেটা বুঝতে গেলে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে রামোজি ফিল্ম সিটির ইতিহাসে। হায়দ্রাবাদের যে অঞ্চলে ওই ফিল্ম সিটি টি তৈরি সেটি আসলে মহাবীর নিজাম এর যুদ্ধক্ষেত্র। এই স্থানটিতে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ নেহাত কম বার হয়নি, এবং নিহত হয়েছেন শত শত সৈনিক। আর মনে করা হয়, ঠিক এই কারণেই ফিল্ম সিটির বিভিন্ন হোটেলে দেখা যায় অশরীরী আত্মার উপস্থিতি। বলা হয় রাত বাড়ার সাথে সাথে এখানে সৈনিকদের আত্মার উপদ্রব বাড়তে থাকে। তবে ,ছোটখাটো উপদ্রব ছাড়া এই অশরীরী আত্মা এখনো পর্যন্ত কোনও ব্যাক্তির বড় ক্ষতি করেছে বলে শোনা যায়নি। তবে কখনো সেখানে গেলে একা একা রাতের বেলা ঘুরে না বেড়ানোয় ভালো।