নিউজ ডেস্কঃ আমাদের এই বৃহৎ পৃথিবীতে প্রায় ঘটে নানারকম বিস্ময়কর ও অদ্ভুত ঘটনা। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে এরকম অদ্ভুত কিছু ঘটনার ব্যাখ্যা আমরা খুঁজে পেয়েছি আবার এখনো পৃথিবীতে এমন বেশ কিছু বিরল রহস্য রয়ে গেছে যার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান ও দিতে পারেনি ।আর এই অদ্ভুত ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি হলো মাছের বৃষ্টি । হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন বিরল হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় কখনো কখনো বৃষ্টির সাথে আকাশ থেকে পড়তে দেখা গেছে মাছ। শ্রীলংকা, মেক্সিকো, হন্ডুরাস সহ নানা জায়গায় ঘটেছে একই জিনিস ।
শ্রীলংকার চিলাও জেলার এক গ্রামে হঠাৎই আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো মাছ নেমে আসতে থাকে গ্রামের ওপরে ।তারা ঘরের ছাদে ভারী কিছু পড়ার শব্দে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন বাড়ির আশেপাশে রাস্তায় মাঠে সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য মাছ । এমনকি 2012 সালেও শ্রীলংকার দক্ষিণ অংশে একই রকম ভাবে চিংড়িমাছের বর্ষণ হয়েছিল ।
তবে শুধু শ্রীলংকা নয় মেক্সিকোর টামলিপাস প্রদেশের টামপিকো শহরেও ঘটে এই একই জিনিস ।সেখানকার সরকারি কর্মকর্তারা স্বীকার করে নেন মাছ বৃষ্টির কথা এবং সেইসঙ্গে স্থানীয়দের পোস্ট করা বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় এই ঘটনাটি।
মেক্সিকোতেও সম্প্রতি মাছ বৃষ্টি হয়েছে। টামলিপাস প্রদেশের টামপিকো শহরে সিভিল ডিফেন্সের কর্মকতাগণ গন মাধ্যমে মাছ বৃষ্টির কথা জানান। হালকা বৃষ্টির সাথে পতিত কিছু মাছের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়া হন্ডুরাসে ও প্রায়ই দেখা যায় মাছ বৃষ্টি। এখানকার বাসিন্দাদের মতে অবিশ্বাস্য হলেও এই ঘটনাটি ঘটে মে মাস থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে। প্রথমে সাধারণ ঝড় বৃষ্টির মতই কালো মেঘ জমে আকাশে। কিন্তু তারপরেই অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটে। তুমুল বজ্রপাত ও বৃষ্টির সাথে মাটিতে আছড়ে পরে অসংখ্য জীবন্ত মাছ। আর এখানে এই ঘটনা এখন এতটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে যার 1998 সাল থেকে স্থানীয়রা এখানেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক উৎসব পালন করে থাকে ।
কিন্তু কেন ঘটে এমন অদ্ভুত ঘটনা ? হন্ডুরাসের অনেকে মনে করেন 1856 সালে হন্ডুরাসে আসা এক সাধুর কারণে এখানে এই ঘটনা ঘটে। কথিত আছে এখানে বহু মানুষকে ক্ষুদার্থ দেখে ওই সাধু ব্যক্তি তিনদিন তিন রাত ধরে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেন যাতে কোনো মানুষকে অভুক্ত না থাকতে হয় এখানে। স্থানীয়রা মনে করেন তার প্রার্থনাই খুশি হয়েই ভগবানের দয়াতে প্রত্যেক বছর এখানে এই ঘটনা ঘটে ।
তবে স্থানীয়রা যায় মনে করুক বিশেষজ্ঞদের মতে অস্বাভাবিক হলেও মহাসাগরে সংঘটিত টর্নেডো ঝড়ের সময় উড়িয়ে নিয়ে আসে এই সমস্ত মাছ ,আর শুধু মাছি নয় এইসময় জলে থাকা ব্যাংকসহ সমস্ত কিছুই টর্নেডোর সাথে আকাশে উড়ে যায় আর এই ঘূর্ণিঝড় থামার কিছুক্ষণ পরে মেঘের পরে কোন অজানা কারণে সাময়িকভাবে আটকে থাকে এরা আর একসময় মেঘের ভেতর থেকেই ঝরে পড়তে শুরু করে এই মাছগুলো ।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. র্যান্ডি সেরভানি এই ঘটনাকে তাঁর বইতে উল্লেখ করেন, “ঝড়ের আতংক” হিসেবে। সেরভানি মতে , “১৮৮৯ সাল থেকেই ঘূর্ণীর মাধ্যমে মাছগুলো বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কীভাবে তা ঘটে বলা মুশকিল। বর্তমানে সময়েও এধরনের মাছের পতনের যথাযথ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রদান করা সম্ভব হয়নি।”