লকডাউন এর জন্য অনেকদিন হয়ে গেল পার্লার যাওয়া হচ্ছে না ?এদিকে অবাঞ্ছিত লোমে ঢেকে গেছে মুখ ।অথচ কোন কেমিক্যাল মিশ্রিত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে চাইছেন না মুখে ?কোন চিন্তা নেই আপনার ।কোন কেমিক্যাল মিশ্রিত প্রোডাক্ট ব্যবহারের দরকার কি যদি বাড়ির হোম রেমেডি কাজে লাগিয়েই মুক্তি পেতে পারেন অবাঞ্ছিত লোম থেকে ?আজ আপনাদের মুখের বিভিন্ন অংশের অবাঞ্ছিত লোম তোলার এমন কয়েকটি উপায় বলব যা এই সমস্যার সমাধান তো করবেই সেইসাথে ত্বককে করে তুলবে আরো সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর।
তবে উপায়গুলি বলার আগে একটি সতর্কবার্তা অবশ্যই দেব ।আমাদের মুখের ত্বক অত্যন্ত বেশি সেনসেটিভ ।তাই যেকোনো রকম ঘরোয়া রেমিডি মুখে ব্যবহার করার আগে যাচাই অবশ্যই করে নেবেন তাতে আপনার কোনো রকম অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা ।আর সেজন্য রেমেডি বানিয়ে প্রথমে তা কানের পেছনে বা কনুইয়ে অল্প পরিমাণে লাগিয়ে 5 থেকে 10 মিনিট অপেক্ষা করুন।যদি তোকে কোন সমস্যা না হয় তাহলে মুখে ব্যবহার করুন এটি ।
আসুন জেনে নেওয়া যাক মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার হোম রেমেডি গুলি
টুইজার ব্যবহার –
কোনরকম ঝঞ্ঝাট ছাড়াই একগাদা উপাদান ব্যবহার না করে সবচেয়ে সহজে ভ্রূ বা ঠোঁটের উপরের অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলতে পারেন টুইজার ব্যবহার করে ।টুইজার টি ব্যবহারের আগে ভালো করে স্যানিটাইজ করে নিতে ভুলবেন না অবশ্যই ।এরপর ভ্রূ ও ঠোঁটের ওপর অল্প পরিমাণে পাউডার এপ্লাই করে আয়নায় দেখে টুইজার দিয়ে আস্তে আস্তে তুলে ফেলুন অবাঞ্ছিত লোম ।প্রথম দিকে টুইটার ব্যবহার করলে অল্প ব্যথা হবে ঠিকই তবে করতে করতে আস্তে আস্তে হয়ে যাবে ব্যথা ।
চিনি লেবুর রস দিয়ে –
টুইজার ব্যবহার না করতে চাইলে বাড়িতেই ঘরোয়া উপায় তৈরি করে নিতে পারেন ওয়্যাক্স ।শুধুমাত্র মুখের অবাঞ্ছিত লোম এনা হাত ও পায়ের অবাঞ্ছিত লোম ও খুব সহজেই এই ঘরোয়া ওয়্যাক্স দিয়ে তুলে ফেলতে পারবেন ।
একটি পাত্রে কিছুটা জল নিয়ে তার মধ্যে আটকা চিনি ও একটি গোটা লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে গরম করতে হবে ।মিশ্রণটি ফুটতে থাকলে তা নামিয়ে কিছুক্ষণ ধরে ঠান্ডা করতে হবে ।উষ্ণ থাকা অবস্থাতে ব্যবহার করতে হবে এটি ত্বকে ।ত্বকের অল্প জায়গায় এটি এপ্লাই করে ওয়াক্সিং স্ট্রিপ বা কোন কাপড় এর সাহায্যে টেনে তুলে দিতে হবে এটি ।দেখবেন এতে ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম ও হবে দূর ।
চিনি মধুর মিশ্রণ –
চিনি ও মধু মিশ্রিত করে ও বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন ওয়্যাক্স।একটি পাত্রে সমপরিমাণ চিনি ও মধু ভালো করে মিশিয়ে তা গরম করতে হবে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ।সেই সাথে যোগ করতে হবে এক চামচ লেবুর রস ।মিশ্রণটি ভালো করে ফুটে উঠলে তা ঠান্ডা করতে হবে কিছুক্ষণ ধরে ।মিশ্রণটি উষ্ণ থাকা অবস্থাতেই ত্বকে লাগিয়ে ওয়াক্সিং স্ট্রিপ বা কাপড় বসিয়ে তুলে ফেলতে হবে ।
ডিম কর্নফ্লাওয়ারের মিশ্রণ –
বেশি পরিমাণে চিনি মধু ইত্যাদি ওয়েস্ট করতে না চাইলে ডিমের সাথে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে তৈরি করেন ঘরোয়া হেয়ার রিমুভার ।একটি পাত্রে আজ চা চামচ কর্নফ্লাওয়ার ,ডিমের সাদা অংশও এক টেবিল চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে প্রথমে ।এটি গরম করার কোন দরকার নেই তোকে এই মিশ্রণটি কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন প্রথমে ।মিশ্রণটি ত্বকে শুকিয়ে গেলে টেনে তুলে ফেলুন এটি দেখবেন মুখমন্ডলের যাবতীয় অবাঞ্ছিত লোম দূর হয়েছে ।
কাঁচা হলুদ ও দুধের পেস্ট –
লোম তোলার জন্য আরো একটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন কাঁচা হলুদ বাটা ও দুধ দিয়ে ।দুধের বদলে দই দিও বানাতে পারেন এই প্যাকটি ।তবে কাঁচা হলুদ বাটার বদলে গুঁড়ো হলুদ ব্যবহার করবেন না যেন তাহলে সেরকম ভাল ফল পাবেন না ।এই মিশ্রণটি ঠোঁটের ওপরের অবাঞ্ছিত লোম তুলতে বিশেষ উপকারী ।দুধ ও হলুদ বাটা একসাথে মিশিয়ে তা ঠোঁটের ওপরে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন যতক্ষণ না শুকিয়ে যায় মিশ্রণটি ।এরপর ঘষে ঘষে ভালো করে তুলে ফেলুন পেস্ট টি ।এবার ভাল করে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন জায়গাটি দেখবেন অবাঞ্ছিত লোম উঠে গেছে ।
অ্যালোভেরা জেল, সুজি ও অলিভ অয়েলের প্যাক –
আগের ঘরোয়া রেমেডি গুলি সমস্ত ত্বকেই অ্যাপ্লাই করা যাবে ঠিক ই তবে নিম্নলিখিত এই রেমেডি টি রইল বিশেষত সেনসিটিভ স্কিনের জন্য।একটি পাত্রে আধ কাপ অ্যালোভেরা জেল আধ চা চামচ লেবুর রস 1 চা চামচ মধু 1 চা চামচ চালের গুড়ার সুজি এবং আধা চা চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন একটি ঘন প্যাক ।এরপর শুধু চোখ ও ভ্রু টুকু বাদ দিয়ে গোটা মুখে ফেস মাস্ক এর মতো লাগিয়ে নিন এটি ।প্যাকটি শুকিয়ে গেলে অল্প জল দিয়ে ভালো করে ঘষে ঘষে তুলে ফেলুন এটি ।এতে মুখের অবাঞ্ছিত লোম সহজে দূর হবে সেই সাথে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে সুন্দর ।