নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: নাক ডাকার সমস্যা যে এক ভয়ঙ্কর সমস্যা এ কথা অস্বীকার করবেন না কেউই।বরং এর থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে মরিয়া সবাই।সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর যখন শান্তির ঘুম চাইছেন নিজের ঘুমও পর্যাপ্ত হলো না, উপরন্তু সঙ্গীও চটে লাল। কারণ,আপনার এই নাক ডাকা। এই সমস্যা এখন জাঁকিয়ে বসেছে প্রায় প্রতিটি ঘরেই। কিন্তু এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়টি জানা নেই অধিকাংশেরই।আবার এর উল্টো চিত্র টাও অনেক সময় নজরে আসে।ঘুমের সময় সঙ্গীর নাক ডাকায় বিরক্ত হওয়াটাই রোজকার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে অনেকের।শত অনুরোধ-উপরোধেও মেটে না এই সমস্যা।এই নাক ডাকার অভ্যাসকে খুব একটা নিরাপদ বলে ভাবছেন না চিকিৎসকরাও। শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা এর পাশাপাশি স্লিপ অ্যাপনিয়াকেও এই অতিরিক্ত নাক ডাকার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন তারা। চিকিৎসকদের মতে, স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও নাক ডাকার মতো সমস্যা আসতে পারে,যা বাড়িয়ে তুলছে হৃদরোগ।ডেকে আনছে মৃত্যুর ঝুঁকিও।
চিকিৎসকদের মতে, ন্যাজাল প্যাসেজে জমে থাকা অতিরিক্ত মিউকাসের কারণে ঘুমের সময় নাক ডাকার ঘটনা ঘটে থাকে।এছাড়া স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও অনেক সময়ে নাক ডাকে।সোজা ভাবে বললে নাক ও গলার মধ্যে দিয়ে বায়ু চলাচলে বাধার সৃষ্টি হলেই গোটা শ্বাসযন্ত্রে এক ধরনের কম্পন তৈরি হয়।সে ক্ষেত্রে নাকডাকা এক ধরনের সঙ্কেতও বটে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া বা নাক ডাকার সমস্যাকে অবহেলা করার মতো বোকামি করে থাকেন অনেকেই।তাই অতিরিক্ত নাক ডাকার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে নাক ডাকার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।চলুন দেখে নেওয়া যাক সেগুলোই।
প্রথমেই ওজন ঝরিয়ে ফেলুন দ্রুত। অফিস থেকে ফেরার পথে কিছুটা পথ হাঁটুন,নজর দিন ডায়েটেও। ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবারের প্রতি লোভ কমিয়ে চেষ্টা করুন ফল বা ফলের রস বেশি করে খাওয়ার।তালিকা থেকে বাদ দিন কফি ও।অন্যদিকে মদ্যপান নাক ডাকার অন্যতম ট্রিগার। মদে আসক্তি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি।
এক দিকে পাশ ফিরে ঘুমালে নাক ডাকার সমস্যা খানিকটা হ্রাস পায় তাই চিত হয়ে শোয়ার অভ্যেস থাকলে তা বদলে ফেলতে হবে জলদি। আপনার সঙ্গীকেও বলুন, তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে আপনাকে পাশ ফিরিয়ে দিতে। প্রথম কয়েক দিন সমস্যা হলেও পরবর্তীতে অভ্যেস হয়ে যাবে।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভারী খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং এর পাশাপাশি রাতের খাবার খেয়েই শুতে যাওয়া চলবেনা। হাতে আড়াই ঘণ্টা সময় নিয়ে রাতের খাওয়া সারুন।
গলা ব্যাথা জাতীয় সমস্যা থাকলে সেডাটিভ জাতীয় ওষুধ এড়িয়ে চলুন।গবেষণা বলছে এই ধরনের সেডাটিভগুলি গলার পেশীগুলিকে সাময়িক আরাম দিলেও এর প্রভাবে নাক ডাকার প্রবণতা কে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।
এই সমস্ত নিয়ম গুলো মেনে চললেই পাওয়া যাবে চটজলদি মুক্তি।