ক্যারোসটা হোটেল

নিউজ ডেস্কঃ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অদ্ভুত নানা হোটেল আছে। কিন্তু পর্যটকদের আকর্ষিত করার জন্য কোন কারাগারের ভয়ংকর ইতিহাস কে কাজে লাগিয়ে কারাগার কে হোটেলে পরিণত করার কথা কি আগে শুনেছেন ?তার ওপর আবার যদি বলি হোটেলটি অভিশপ্ত বলে কুখ্যাতি অর্জন করেছে? জানতে চান হোটেলের নাম কি?

ক্যারোসটা হোটেল নামে পরিচিত এই হোটেলকে অনেকেই ক্যারোসটা জেলখানা নামে চেনে।ঐতিহাসিক লাটভিয়ার লাইপেজা শহরে অবস্থিত এটি ।প্রাচীন এই বিল্ডিংটি নেহাত কম ইতিহাসের সাক্ষী হয়নি। জানলে অবাক হবেন এটি কিন্তু কোন সাধারন জেলখানা ছিল না দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি ছিল জার্মানির নাৎসি বাহিনীর কারাগার । এই কারাগারে শতাধিক বন্দী মারা যান তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মারা হয়েছিল গুলি করে ।শুধু তাই নয় জীবিত বন্দীদের ওপর এমন অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো এখানে যে জেলখানা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অনেক কয়েদি   ফটকের উপর লিখে রাখত —‘নরক হতে মুক্তি’।

তবে, প্রথম থেকেই জেলখানা হিসাবে ব্যবহৃত হতো না এটি। ১৯০০ সালে এটি নির্মাণ করা হয় সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জেলখানাটির দখল নিয়ে নেয় জার্মানরা ।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বেশ কিছুদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল এই জেলখানা । তবে, পরবর্তীকালে এই কারাগারের ঐতিহাসিক ভ্যালু  কে কাজে লাগিয়ে কর্তৃপক্ষ একে এক অভিনব কায়দার হোটেলে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন। হোটেলের রুমগুলো তৈরি কারাগারের কক্ষের মত করে ।

প্রতিটি রুমে  আছে লোহার খাট, ছোট্ট একটা ড্রেসার আর টয়লেট,যার ফলে রুমগুলো দেখে সত্তিকারের কারাগারের সেল  মনে হয়। হোটেলের অতিথিদের সাথে আচরণ ও করা হয় অনেকটা জেলখানার কয়েদিদের মতোই । তবে ,অতীত এখনো পিছু ছাড়েনি ক্যারোসটা হোটেলের। স্থানীয়দের মতে  হোটেলটি অভিশপ্ত। এখানে রাত্রি যাপন করা অনেক পর্যটকই জানিয়েছেন তারা রাতের বেলা করিডরে পা টেনে হাটার শব্দ হঠাৎ চিৎকার এমনকি বন্দুকের আওয়াজ পর্যন্ত শুনেছেন। এছাড়া এখানে প্রায়ই নাকি বিদ্যুতের সংযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়া বা হঠাৎ বাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এমনকি হোটেলের স্টাফেরা ও জানান যে এখানে হঠাৎ নিজে থেকেই সেলের দরজা খুলে যায়, শিকলে বাড়ি মারার প্রচন্ড আওয়াজ হয় কখনো বা বাল্ব নষ্ট হয়ে যায়।স্থানীয়দের মতে  এখানে এখনো মৃত বন্দীদের আত্মা ঘুরে বেড়ায় মুক্তির আকাঙ্খায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *