নামটা শুনেই নিশ্চয়ই আন্দাজ করে ফেলেছেন যে এটি কোন সাধারণ গুহা নয়। নরমুন্ডি আকৃতির হওয়ার কারণে এই গুহা নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছিল

নিউজ ডেস্কঃ পৃথিবীতে অদ্ভুতুড়ে জায়গার সংখ্যা নেহাত কম নয়। এই বৃহৎ পৃথিবীর নানা প্রান্তে এখনো এমন অনেক অনাবিষ্কৃত জায়গা রয়ে গেছে যেখানে মানুষের পদার্পণ হয়নি। এরকমই অজানা নানা জায়গার খবর মাঝে মাঝে উঠে আসে খবরের শিরোনামে। সম্প্রতি এমনই জায়গার কথা জানা গেছে  ইংল্যান্ডে, যার নাম নরমুন্ডি গুহা।

নামটা শুনেই নিশ্চয়ই আন্দাজ করে ফেলেছেন যে এটি কোন সাধারণ গুহা নয়। নরমুন্ডি আকৃতির হওয়ার কারণে এই গুহা নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছিল এটি আবিষ্কার হওয়ার পর থেকেই। তবে, গুহাটির আকৃতি যে কেবল অদ্ভুত তা নয়। এই অল্প সময়ের মধ্যেই ভুতুড়ে ,অশুভ ও প্রাণঘাতী হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে এই পার্বত্য গুহা। অনেকেই এটাকে মৃত্যুর ফাঁদ  বলেও ডেকে থাকেন ।

জানলে অবাক হবেন এই গুহার আবিষ্কার ও কিন্তু হয়েছে অত্যন্ত অদ্ভুতভাবে। ২০০৫ সালে, এক ডুবুরি সমুদ্রের তলে অনেকটা মানুষের মতো কিছু একটা দেখে প্রচন্ড ভয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কোনিস্টন মাউনটেন রেসকিউ টিমের সদস্যরা তাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে আনলে তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা জানান। আশ্চর্যজনক এই ঘটনার কথা শোনার পরে এক ফটোগ্রাফার সহ ডুবুরি পিটার বার্ডস লে জায়গাটি খোঁজার চেষ্টা করেন পুনরায়। সমুদ্রের তলদেশে নানা প্রতিকূলতা পার করে অবশেষে তারা ওই গুহার ছবি তুলতে সক্ষম হন।

তবে আসল চমক অপেক্ষা করছিল তারপরে। স্টুডিওতে ছবিটির কাজ শেষ করার পরে দেখা গেল গুহাটির আকৃতি যেন একদম নরমুণ্ডুর মত। আর তা এতই ভয়ঙ্কর যে সেই ছবি দেখে প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলেন তারা।

আবিষ্কার হওয়ার পর থেকেই এই অদ্ভুত গুহাটি কে নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন নেহাত কম নেই। গুহাটির আকৃতি এরকম কেন এবং গুহাটির ভেতরে কি আছে তা জানার চেষ্টাও কম বার হয়নি। কিন্তু সেই সবই বিফলে যায়। ব্রিটেনের ক্যামব্রিয়া অঞ্চলের কোনিস্টন এলাকার দুর্গম পর্বতের  তলদেশে অবস্থিত এই গুহার রহস্য উদঘাটন করতে মারা যান বহু ডুবুরি।

২৫মিটার দৈর্ঘ্য যুক্ত এই গুহার প্রবেশ পথের আয়তন প্রায় দুই বর্গমিটার। দুঃসাহসী ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ডুবুরিদের কাছে এটি এক পছন্দের স্থান হলেও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে অত্যন্ত উচ্চমানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি ছাড়া বাকিদের ওই গুহায় প্রবেশ নিষেধ। একসময় এই গুহা পুরোটাই সমুদ্রের অভ্যন্তরে থাকলেও বর্তমানে এর প্রবেশপথের অর্ধেকটি ভাসমান। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেক ডুবুরি প্রায়ই এই গুহায় প্রবেশ করেন ঠিকই তবে এই অভিযানে গিয়ে প্রায়ই বহু ডুবুরীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এমন কি আগের বছরও তিনজন ডুবুরি এই গুহায় প্রবেশ করে মারা যান। এছাড়া এই গুহা থেকে প্রাণে বেঁচে যে সমস্ত ডুবুরিরা ফিরে আসতে সক্ষম হন তাদের মুখ থেকে প্রায় ই শোনা যায় গুহার ভেতরে ঘটা নানা অদ্ভুতুড়ে ঘটনার কথা ।

এই কারণেই স্থানীয় অনেকে মনে করেন সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত এই গুহা আসলে এক মৃত্যু ফাঁদ । এমনকি স্থানীয় দের কাছে এটি ভুতুড়ে স্থান হিসেবেও পরিচিত। গুহাটি সত্যি ভুতুড়ে কিনা তা নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও  এই গুহাটি যে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বিপদজনক স্থান গুলির মধ্যে একটি তা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *