নিউজ ডেস্কঃ মাছে ভাতে বাঙালি। মাছের কথা শুনলে জিভে জল আসেনা এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল। তবে মাছ যে সর্বদা খাওয়া হয় তেমন নয় পৃথিবীতে এমন বহু প্রজাতির মাছ আছে যাদের সৌন্দর্যের জন্য সেইসব মাছ বিখ্যাত।
গোল্ড ফিশ ঠিক তেমনই একটি মাছ। স্বর্ণ বর্ণের বাহারি মাছ। বিশ্বের সবচেয়ে নামি প্রজাতির মাছ এটি৷ এর এ মাছ সচরাচর ছোট আকৃতির হয়ে থাকে৷গোল্ডফিশ মূলত পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের মাছ। তবে বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলেই এটি জনপ্রিয়। এই বিপুল পরিমাণ মাছের ৬৫% সরবরাহ করে ভারত, মালয়েশিয়া, চীন ও থাইল্যান্ড। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সাধারণত ঘরের অ্যাকুরিয়ামে গোল্ডফিশ রাখা হয়।এ্যাকুয়ারিয়ামে খুব সহজেই একে লালন-পালন করা যায়।
তবে এটিকে অন্যতম আক্রমণমূলক জলজ প্রাণী মনে করা হয়।গোল্ডফিশের কারণে জলের ক্ষতি হয়, রোগের বিস্তার ঘটতে পারে, অন্যান্য জলজ প্রাণীর জীবননাশ হতে পারে এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গোল্ডফিশ সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণা হলো এটি পাঁচ বছর পর্যন্ত বাঁচে এবং ১২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হয়। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হলো, গোল্ডফিশ ২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে এবং ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হয়।যুক্তরাজ্যের নর্থ ইয়র্কশায়ারে ১৯৯৯ সালে একটি গোল্ডফিশ ৪৩ বছর বয়সে মারা গিয়েছিল। এটি গোল্ডফিশ বেঁচে থাকার রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার গবেষকেরা ফুটবলের সমান বড় এমন অনেক গোল্ডফিশ পেয়েছেন। এমন অনেক গোল্ডফিশ পাওয়া গেছে যেগুলোর ওজন এক কেজির বেশি।
গোল্ডফিশের রয়েছে বরফ শীতল জলে বেঁচে থাকার অদ্ভুত অভিজোযন ক্ষমতা। মানুষ সহ অধিকাংশ প্রাণী যেখানে অক্সিজেন ছাড়া কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়, সেখানে উত্তর ইউরোপের বরফ ঢাকা জলাভূমিতে গোল্ডফিশ মাসের পর মাস বেঁচে থাকে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন বরফে ঢাকা শীতল হ্রদের জলে বাঁচতে গোল্ডফিশ শরীরের ল্যাকটিক অ্যাসিড অ্যালকোহলে রূপান্তরিত করে ফেলে। অক্সিজেনের অভাবে শরীরে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। গোল্ডফিশ এবং একই জাতের দু-একটি মাছ এই ল্যাকটিক অ্যাসিড অ্যালকোহলে রূপান্তরিত করে তা বেঁচে থাকার শক্তি হিসাবে ব্যবহার করতে পারে।
অনেকের মতে গোল্ডফিশ কোনো বিষয় মনে রাখতে পারে মাত্র তিন সেকেন্ড। বাস্তবে গোল্ডফিশের স্মৃতিশক্তি আসলে এত কম নয়। এরা বিভিন্ন আকৃতি, রং ও শব্দের মধ্যেও পার্থক্য করতে পারে। মাছেদের কয়েকদিন একটি নির্দিষ্ট স্থানে খাবার দিলে কয়েকদিন পর মাছগুলো ঠিকই সেই একই জায়াগায় এসে খাদ্য অনুসন্ধান করবে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে এই স্মরণকাল ১২ দিন পর্যন্ত হতে পারে।