নিউজ ডেস্কঃ রাশিয়ার পাশাপাশি আমেরিকার থেকেও এখন প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র কিনছে ভারত। কারন দুর্গম অঞ্চলে এইসব অস্ত্র বিশেষ কাজ দেবে। এবং এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু অস্ত্র ভারত চীনের থেকে ক্রয় করেছে যা লাদাখে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে।
১. C-17 গ্লোবমাস্টার : ভারতীয় বিমানবাহিনীতে এর সংখ্যা ১১ টি। ভবিষ্যতে আরও একটি আসতে চলেছে।প্রতিকুল পরিস্থিতিতে বিশেষ করে লাদাখের মতো প্রতিকূল ভূমিতে এবং উচ্চতায় এই বিমান ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দারুনভাবে লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে সক্ষম। এটি একবারে সত্তর টনের ওপরে কার্গো বহন করতে পারে। ১০৮০ কিলোমিটার প্রতিঘন্টা গতিবেগে উড়তে সক্ষম এই বিমান ভারতীয় বিমানবাহিনী ছাড়াও আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের বিমানবাহিনীতে দেখা যায়।
২. P-8I পোসাইডন : সেনাবাহিনীর হাতে থাকা অন্যতম শক্তিশালি হান্টার। যা জল থেকে স্থলে ভারতের সেনাবাহিনীকে সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম। ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে থাকা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সাবমেরিন হান্টার হল এই পোসাইডন। এটির সবথেকে বড় ব্যাপার হল এই যে এটি এর বিভিন্ন সেন্সর দিয়ে দীর্ঘসময় ধরে ভূমিতে দক্ষতার সাথে সার্ভিল্যান্স মিশন চালাতে সক্ষম। বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে আটটি এয়ারক্রাফ্ট রয়েছে ভবিষ্যতে আরো চারটি আসতে চলেছে।
৩. C-130 J সুপার হারকিউলিস : পৃথিবীর একাধিক সেনাবাহিনীকে দীর্ঘসময় ধরে সার্ভিস দিয়ে আসা একটি কার্গো বিমান। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে হারকিউলিস ফ্যামিলি পৃথিবীর বহুদেশে সার্ভিস দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালে ৪০০ টি এই কার্গো বিমান ১৭ টি দেশে বিক্রি করা হয়েছে। এটি ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে থাকা চমৎকার একটি কার্গো এয়ারক্রাফ্ট।এর একটি ভালো ব্যাপার হল এই যে এটিকে অপারেট করার জন্য কোন বিশেষ ধরনের রানওয়ের দরকার পরে না। এরকম সুবিধা নিয়েও,এটি ১৯ টন মাল বহন করতে পারে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে বর্তমানে এরকম ১১ টি সুপার হারকিউলিস আছে।স্পেশাল মিশনে এই ধরনের এয়ারক্রাফ্ট বিশেষ সুবিধা প্রদান করে থাকে। ৬৪৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিবেগে এটি উড়তে সক্ষম।
৪. CH-47 চিনুক : কিছু দিন আগেই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ হয়েছে এই হেভী লিফ্টার কার্গো হেলিকপ্টারটি। ১৯৬২ সালে সার্ভিসে আসে এই হেলিকপ্টারটি। এটিকে হেলিকপ্টারের দুনিয়ার রাফালে বলা যায়।কারন এর মাল্টিরোল ক্ষমতার কারনে। এটি একবারে এগারো টন পর্যন্ত মাল বহন করতে পারে। পর্বতের দূর্গম অঞ্চলে দ্রুত ট্রুপস,আর্টিলারি মোতায়েনের ক্ষেত্রে এর জুড়ি মেলা ভার। ভারত এরকম ১৫ টি হেলিকপ্টার অর্ডার দিয়েছে,যেগুলির থেকে ইতিমধ্যেই কিছু হেলিকপ্টার লাদাখে সার্ভিস দিচ্ছে। ভারত আরো এই চিনুক অর্ডার দেবে। ভারতীয় সেনাবাহিনী ছাড়াও আমেরিকা এবং জাপানের সেনাবাহিনিতেও দেখা যায় এই হেলিকপ্টারটি। ৩১০ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে উড়তে সক্ষম এই হেলিকপ্টারটি।
৫. AH-64E অ্যাপাচি : শত্রুর ট্যাঙ্কের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ মানা হয় এই আট্যাক হেলিকপ্টারটিকে। ক্লোজ কমবেট রোলে এটি দূর্দান্ত। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ অ্যাটাক হেলিকপ্টার মানা হয়ে থাকে। ভারত এই ধরনের বাইশটি অ্যাপাচি কিনেছে। মোট ৬৯ টি অ্যাপাচি বর্তমানে সার্ভিসে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি ২৯৩ কিমি/ঘণ্টার গতিবেগে উড়তে সক্ষম।
একটা বিষয় না বললেই নয়, তাহল আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। রাশিয়া টাকা পেলে,শত্রুকেও তাদের অস্ত্র বিক্রি করতে (অতীতে আমেরিকার কাছে অস্ত্র বিক্রির উদাহরণ রয়েছে রাশিয়ার,তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার বিমান ধংসের পরেও রাশিয়া তুরস্ক কে S-400 এর মতো মিসাইল দিয়েছে) পিছুপা হবেনা। অন্যদিকে আমেরিকার অস্ত্রের দাম বেশি হলেও, তারা বন্ধু দেশ ছাড়া কাওকে অস্ত্র দেয় না, সে যত পরিমাণ অর্থ দিক না কেন। ভারত আমেরিকা থেকে এরকম পাঁচটি স্টেট অফ আর্ট ওয়েপন পেয়েছে,যা যথেষ্ঠ ভালো বিষয়।