এক মহৎ কাজের জন্য বুদ্ধের শিষ্যরা ভারত থেকে পবিত্র বুকের হাড় নিয়ে আসে পৃথিবীর এই ছোট্ট দেশে

এক মহৎ কাজের জন্য বুদ্ধের শিষ্যরা  ভারত থেকে পবিত্র বুকের হাড় নিয়ে আসে পৃথিবীর এই ছোট্ট দেশে

অল্প খরচে বিদেশ ভ্রমণ চান?লাওসের সৌন্দর্য আপনার মন জয় করবে। এক সময়ের ফ্রেঞ্চ উপনিবেশ লাওস( LAOS People’s Democratic Republic) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একমাত্র সমুদ্র বিহীন ভূমি পরিবেষ্টিত দেশ যাকে বেষ্টন করে আছে থাইল্যান্ড, মায়ানমার, চীন, কম্বডিয়া,ভীয়েতনাম।

পর্বতময়, স্থলবেষ্টিত দেশ লাওস খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এবং জাতিগতভাবে বিচিত্র। লাওসের মোট আয়তন বাংলাদেশের প্রায় দিগুণ, 236,800 বর্গ কিমি! আর জন সংখ্যা? মাত্র 7 মিলিয়ানের মতো! 1953 সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। 1975 সালে একটি সাম্যবাদী বিপ্লব দেশটির ছয়-শতাব্দী-প্রাচীন রাজতন্ত্রের পতন ঘটায় এবং একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে দেশটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

রাজধানী – ভিয়েনতিয়েন

ভাষা-লাও

মূদ্রা- কিপ (Kip)

স্থানীয় সময়- জিএমটি+ 7

গোটা দেশে প্রকৃতি তার অপার মহিমা ছড়িয়ে দিয়েছে। এসব সৌন্দর্য আস্বাদনে দেশটির অভ্যন্তরে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে না। চারপাশে দৃষ্টি দিলেই মনটা ভরে উঠবে। 1990 সালে এই দেশ বাইরের পর্যটক দের কাছে উন্মুক্ত হয় । তবে,  এই অল্প সময়েই প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য পর্যটকদের মন জয় করেছে। সেখানে দেখার আছে অনেক কিছু। এখানে জেনে নিন কয়েকটি স্থানের নাম

১) ফা থাট লুয়াং- এখানে রয়েছে ‘দ্য গোল্ডেন স্টুপা অব ফা থাট লুয়াং’। 1566 সালে নির্মিত এই স্টুপা পরবর্তিতে বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। বলা হয়, তৃতীয় শতকে বুদ্ধের কয়েকজন শিষ্য ভারত থেকে একটি পবিত্র বুকের হাড় আনেন। সেখানেই গড়ে ওঠে এই স্টুপা। এটা লাওসের জাতীয় প্রতীকের একটি। মাঝের প্রধান গম্বুজটিকে ঢেকে রেখেছে 45 মিটার উঁচু স্বর্ণালী পাতা। এটাকে রাজধানী ভিয়েনতিয়ানের যেকোনো স্থান থেকে দেখা যায়।

২) বুদ্ধা পার্কঃ রাজধানী থেকে 25 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি। গৌতম বুদ্ধ ও হিন্দু দেবতাদের বেশ কয়েকটি মূর্তি রয়েছে এখানে। 1958 সালে এই পার্কটি তৈরি করেন বুদ্ধের অনুসারী এক সন্ন্যাসী লুয়াং পু বোনলিয়াও সুলিয়াত। অদ্ভুত এই পার্কে ছড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির নিটোল রূপ। থাইল্যান্ড থেকে লাওস প্রবেশের রাস্তায় এই পার্কের দেখা মেলে। পার্কজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ২ শতাধিক মানুষ, দেবতা, প্রাণী আর দানবের মূর্তি।

৩) পবিত্র পাহাড়ঃ ফু সাই বা পবিত্র পাহাড় লুয়াং প্রাবাংয়ের আধ্যাত্মবাদের মূল কেন্দ্র। 100 মিটার উঁচু হিললক টাওয়ার ইউনেস্কোর হেরিটেজ সাইটে স্থান করে নিয়েছে। এ শহরে প্রবেশের সময়ই প্রথম এ পাহাড় দেখতে পারবেন। মাটি থেকে 355 পা ওপরের দিকে গেলেই পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছবেন। অর্ধেক ওঠার পরই বুদ্ধের অনেক মূর্তি দেখতে পাবেন।

৪)কুয়াং সি জলপ্রপাতঃ লুয়াং প্রাবাং থেকে 20 কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এই অসাধারণ জলপ্রপাত। আশপাশে ঘোরার জন্য দারুণ এক স্থান এই জলপ্রপাত। পাহাড়ের ওপরে বেশ কয়েকটি উৎসের পানি এক হয়ে 60 কিলোমিটার নিচে জলপ্রপাত হয়ে পড়ছে। যেখানে পানি পড়ছে সেখানে সাঁতারের দারুণ স্থান রয়েছে।

৫) লাওসের হাড়িঃ পৃথিবীর অন্যতম দানবীয় স্থাপনার মধ্যে লাওসের Plain of Jars অন্যতম। লাওসের জিয়াংখোয়াং প্লেটের যে দিকে তাকানো যায় সেদিকেই দেখা যায় বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে আছে বিশাল বিশাল সিরামিকের হাতলবিহীন হাড়ি(Urn)। এপর্যন্ত প্রায় হাজারখানেক হাড়ির খোজ পাওয়া যায়। এইসব হাড়ির ব্যবহার নিয়ে অনেক জল্পনা রয়েছে,কেউ বলে জলের আর খাদ্যের মজুদের জন্য, কেউ বলে পিপড়া হতে খাদ্যকে নিরাপদ রাখার জন্য। এশিয়ার লৌহযুগের সময়কালীন অন্যতম এই স্থাপনাগুলি। 1930 সালের শুরুর দিকে সৎকার কার্যে ব্যাবহার হত বলে জানা যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন জারের ভিতর মানুষের হাড় দেখে নিশ্চিত হয়েছে এইগুলি সৎকারের জন্যই ব্যাবহার হত।

লাওসের ভিসা যেকোনো ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার থেকে On arrival ভিসা হিসাবে  পাওয়া যাবে  অথবা দিল্লীতে অবস্থিত লাওস ambassy থেকেও পাওয়া যাবে। খাওয়া দাওয়া এখানে খুব সহজেই 200 টাকার মধ্যে মেটানো সম্ভব। হোটেলে থাকার খরচ ও খুব সামান্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *