নিউজ ডেস্কঃ অজিত ডোভাল। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান। দেশ, বিদেশে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর কাটিয়ে দেশের একাধিক কঠিন সমস্যা একাহাতে সামলেছেন তিনি। বিশেষ করে পাকিস্তানে গিয়ে বেশ কয়েকবছর কাটিয়ে ছিলেন এই মানুষটি।
মিশন- পাকিস্তান (সময়- অজ্ঞাত)
প্রায় সাত বছর পাকিস্তানের মাটিতে কাটিয়েছিলেন অজিত দোভাল। এর মধ্যে ইসলামাবাদের হাইকমিশনে কাটিয়েছিলেন প্রায় ছ’বছর। এক বছর অজ্ঞাতবাসে ছিলেন তিনি। এই এক বছর ছদ্মবেশে কাটিয়েছিলেন লাহোরের এক মুসলিম মহল্লায়। দাড়ি রেখেছিলেন। স্থানীয় মসজিদে যেতেন স্থানীয় পোশাক পরে। পাকিস্তানিদের মতোই উর্দু বলতে এবং পড়তে পারতেন। গড়গড় করে পড়ে দিতেন আরবি কিতাব। তাই মহল্লার কেউ সন্দেহ করেননি আন্ডারকভার ভারতীয় স্পাই অজিত ডোভালকে।
ওই এক বছরে তিনি আইএসআই ও পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি সম্পর্কে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। জেনেছিলেন পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটিগাড়া ভারতবিরোধী সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির আয়ের উৎস, তাদের ঘাঁটিগুলির অবস্থান, ঘাঁটিগুলিতে অস্ত্র ও রসদ যাওয়া আসার পদ্ধতি। সংগ্রহ করেছিলেন পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত গুরুত্বপুর্ণ বিভিন্ন তথ্য। যে তথ্যগুলি পরবর্তীকালে ভারতের কাছে তুরুপের তাস হয়ে উঠেছিল।
লাহোরের এরকমই কোনও মহল্লায় অজ্ঞাতবাসে ছিলেন অজিত ডোভাল।
অজিত ডোভাল জাতীয়স্বার্থে অজ্ঞাতবাসের দিনগুলির কথা কখনও বিস্তারিতভাবে জানাননি। তবে একটি ঘটনার কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন। অজ্ঞাতবাসকালে একবার প্রায় ধরা পড়তে পড়তে বেঁচে গিয়েছিলেন ডোভাল। একদিন তিনি মসজিদে নামাজ পড়ে ফিরছিলেন। মসজিদের বাইরে বসেছিলেন বৃদ্ধ মৌলবী। তিনি ডেকেছিলেন অজিত ডোভালকে। নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর ঘরে। দরজা বন্ধ করে বলেছিলেন, ‘তুমি হিন্দু’। চমকে উঠেছিলেন অজিত ডোভাল। মৌলবীকে ডোভাল বলেছিলেন, আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে, আমি নিষ্ঠাবান মুসলিম। মৌলবী বলেছিলেন, তোমার কানের লতিতে থাকা ছিদ্র প্রমাণ করছে তুমি হিন্দু।
অজিত ডোভাল যে গ্রামে জন্মেছিলেন, সেখানে পুত্র সন্তানদেরও কানের লতিতে ছিদ্র করার প্রথা ছিল। একটুও না ঘাবড়ে অজিত ডোভাল বলেছিলেন, আমি মুসলমান। ছিদ্রটি জন্ম থেকেই কানের লতিতে আছে। তখন মৌলবী বলেছিলেন, ছিদ্রটা প্লাস্টিক সার্জারি করে বন্ধ করে দাও। নাহলে তোমাকে পাকিস্তানে বিপদে পড়তে হবে। মৌলবীর কথা শুনেছিলেন অজিত ডোভাল। প্লাস্টিক সার্জারি করিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন কানের লতির ছিদ্র। অজিত ডোভাল যে পাকিস্তানের লাহোরে এক বছর লুকিয়ে ছিলেন, তা পাকিস্তান জানতে পেরেছিল ডোভাল পাকিস্তান ছাড়ার পর।