৪২ জন মারা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতার এই স্থান গুলিতে বোমা ফেলেছিল জাপান

৪২ জন মারা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতার এই স্থান গুলিতে বোমা ফেলেছিল জাপান

নিউজ ডেস্কঃ জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়েছিল একাধিক বড় শক্তির বিরুদ্ধে। একটুও পিছুপা হয়নি লড়তে। তবে সেই সময় যেহেতু ভারতবর্ষ ব্রিটিশদের অধীনে ছিল তাই ভারতবর্ষেরও বেশ কিছু স্থানে আক্রমণ করে তারা। এবং খোদ কলকাতাতেই আক্রমণ শানিয়েছিল এই জাপান। বিশেষ কিছু ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ৪২ জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন। কিছু বছর আগে জাপানের ফেলে যাওয়া বম্ব উদ্ধার হয়েছিল।

জাপানের বম্ব থেকে আমেরিকান সেনার দখলদারি – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী ছিল এই শহর কলকাতাঃ-

১৯৪২ এর ২০ ডিসেম্বর। কলকাতায় বোমা বর্ষণ করে জাপানের যুদ্ধবিমান। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। এত গুলো বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও বোমা বর্ষণের স্মৃতি আজও তাজা। ২০১৮-এর ডিসেম্বরের শেষের দিক। বছর শেষের অপেক্ষা করছে শহর কলকাতার মানুষ। এমন সময় শোনা যায় ‘বোমাতঙ্ক’। কলকাতা বন্দরের নেতাজি সুভাষ ডকের দুই নম্বর বার্থে ড্রেজিং করার সময় উদ্ধার করা হয় প্রায় ৪৫০ কেজির এই বম্ব। কোনও উগ্রপন্থি রেখে যাওয়া বম্ব নয়। কারণ, বম্বটি অত্যন্ত পুরনো এবং ঐতিহাসিকও বটে! পরীক্ষা করে জানা গিয়েছিল, এই ধরণের বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১৮-তে দাঁড়িয়ে কলকাতা আবারও উস্কে নিয়েছিল সেই ভয়াবহ মুহূর্তের স্মৃতি।

তবে কি শুধু কলকাতা? ১৯১৮ সালে লর্ড আরউইন ১৫০ বছর পুরনো এই বন্দরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি, অনেক অঘটন। আর তার মধ্যে ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। বম্বটি পাওয়া গিয়েছিল যে স্থানে সেই স্থানের নাম এখন নেতাজি সুভাষ ডক।  যুদ্ধের সময় ছিল আমেরিকান সৈন্যদের দখলে। উদ্ধার হওয়া বোমা যে মার্কিনি, তা স্বভাবতই গবেষণায় বেরিয়ে আসে। সম্ভবত যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখানেই বম্বটি রেখে চলে যায় আমেরিকান সৈন্যরা।

শুধু আমেরিকা নয়। সেই সময়ের ব্রিটিশদের পাশাপাশি জড়িয়ে রয়েছে জাপানিরাও। কলকাতা সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্র না হলেও, পূর্ব প্রান্তের যুদ্ধক্ষেত্রগুলির সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা ছিল এই শহর কলকাতা। তাই জাপানি সেনাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এই শহর। আর তারপর? ‘সা রে গা মা পা ধা নি/ বোম ফেলেছে জাপানি’। কলকাতার বুকে ধেয়ে এসেছিল জাপানি আক্রমণ।

১৯৪২-৪৩ সালে শহরের বেশ কিছু জায়গায় বম্ব পড়েছিল। আকাশপথে হামলা চালায় জাপানি যুদ্ধবিমান। লক্ষ্য ছিল চিনের সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়া। কিন্তু, ততটা করে উঠতে সক্ষম হয়নি। শহরকে বাঁচানোর জন্য বড় বড় হিলিয়াম বেলুনেরও ব্যবস্থা করেছিল ব্রিটিশ প্রশাসন। তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বিস্তর পরিমাণে।

হাতিবাগান, সেন্ট জনস চার্চের মতো জায়গা ছাড়াও বোমা পড়ে কলকাতা বন্দরেও। রাত নয় ১৯৪৩ সালের ৫ ডিসেম্বর দিনের বেলা। রাতের বদলে এই ক্ষেত্রে দিনে হামলা চালিয়েছিল জাপানের বোমারু বিমান। ৪২ জন মারা গিয়েছিলেন এই আক্রমণে। সাময়িক বিধ্বস্তও হয়েছিল বন্দর। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোনোরকম চিড় ধরেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *