নিউজ ডেস্কঃ চীনের সাথে সংঘাতের পর যে ভারতের স্ট্রাটেজি বদলাতে চলেছে তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি সামরিক ক্ষেত্রেও যে এক বিরাট পরিবর্তন আসবে তা কার্যত স্পষ্ট ছিল। ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীর কাজ করার পদ্ধতি বদল করা হবে, এবং দ্রুত সেসব ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েগেছে।
ভারত এর সেনা বাহিনী 2022 সালে নতুনভাবে সাজানো হবে। 5 টি থিয়েটার কমান্ড অধীন সমস্ত সেনাবাহিনী শাখাকে নিয়ে আসতে চলেছে। 5 টি থিয়েটার কমান্ড এর একটির উদ্দেশ্য থাকবে। চীন কে কাউন্টার করার এবং পাকিস্তান কে কাউন্টার করা। এক একক ছাতার তলায় এরা একই সাথে কাজ করবে। সামরিক বিভাগ খুব শিগগিরই মিলিটারি অপারেশন সচিব ও সহকারী সচিব পোস্ট তৈরী হবে ক্যাবিনেট কমিটি অনুমোদন পাওয়ার পর। পাঁচটির মধ্যে একটি হবে চীন কে মোকাবিলা করার নর্দার্ন কম্যান্ড এবং একটি পাকিস্তানের জন্য ওয়েস্টার্ন কম্যান্ড ।
NDA সরকার CDS (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ) বিপিন রাওয়াত কে এর কাজ শুরু করার অনুমোদন দিয়েছেন। সামরিক ও স্ট্রাটেজিক প্লান যারা তৈরী করে থাকেন এমন কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড বিস্তৃত হবে সল্টরাও রিজ সিয়াচেন অঞ্চল থেকে গুজরাট প্রর্যন্ত। এর প্রধানদপ্তর হবে জয়পুর রাজস্থান। নর্দার্ন থিয়েটার কমান্ড হবে কারাকরাম পাস লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশের কিবিতু আউট পোস্ট পর্যন্ত। 3488 কিমি অঞ্চল এর সুরক্ষা তে, এর প্রধানদপ্তর হবে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতে।
তৃতীয় কমান্ড টি হবে দক্ষিণ ভারতে এর নাম পেনিনসুলার কমান্ড, চতুর্থ কম্যান্ড একা সারা দেশকে বায়ু হামলা থেকে বাঁচানোর জন্য এয়ার ডিফেন্স কমান্ড। আর পঞ্চমটি মেরিটাইম বা নৌ কমান্ড। পেনিনসুলার কমান্ড এর প্রধানদপ্তর হবে তিরুবানান্তপুরাম। এয়ার ডিফেন্স কমান্ড টি সারা দেশ কে শত্রুর বিমান ও মিসাইল হামলা থেকে রক্ষা শুধু করবে না, পাশাপাশি শত্রুর উদ্দেশ্যে প্রথাগত ও পরমাণু হামলা এই কম্যান্ড চালাবে। বিভিন্ন জঙ্গি বিমান ও মিসাইল প্রনালী এই কমান্ড অধীনে থাকবে।
বর্তমানে ভারতের সেনা ,বিমান ও নৌ বাহিনী আলাদা আলাদা কমান্ড ও কমিউনিকেশন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যাবহার করে হয়ত এক জায়গা রক্ষা করতে সেনা ও বায়ু সেনা বা নৌ সেনা সমান্তরাল ভাবে কাজ করছে তবে এর কারনে সময় অর্থ দুই নষ্ট হয়েছে, এবং কো অর্ডিনেশান ব্যাহত হচ্ছে। যদিও সেনা প্রধানদপ্তর গুলো অনেক ক্ষেত্রে বায়ু সেনার ঘাঁটির কাছেই। ভবিষ্যতে একটি এরোস্পেস কমান্ড এতে যোগ করার পক্ষপাতী।
ভারত মাত্র একটি মেরিটাইম কম্যান্ড পাবে, সূত্রের মতে আন্দামান ট্রাই সার্ভিস কমান্ড এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে। এর প্রধান কাজ হবে ভারতের সমুদ্রের বাণিজ্য রুট গুলোর নিরাপত্তা ভারত মহাসাগর আরবসাগর, বঙ্গোপসাগর তাদের উপকূল ও দ্বীপ প্রনালী রক্ষা করা । যদিও এখন নৌ সেনা তাদের ব্যবহৃত জিনিস গুলি কারোয়ার সি বার্ড পশ্চিম উপকূল ও বিশাখাপত্তনম পূর্ব উপকূলে সমাবেশ করে আর কিছু আন্দামান ঘাঁটি তে। চীনের উস্কানি মূলক কাজকর্ম জন্য এদের কাজ ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত হওয়ার কথা রয়েছে। এদের প্রধানদপ্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এর নতুন রাজধানী বা আন্দামান রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার যে কোন একটি জায়গায় হবে।
এই গোটা জিনিসটির মূল মন্ত্র হল সেনা নৌ ও বায়ু বাহর কে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে কাজ করা। তিন সার্ভিসের কোন এক হাই রাঙ্কিং অফিসার প্রতি কমান্ড কে নেতৃত্ব দেবেন। যুদ্ধের সময় অর্থ ও দ্রুত সেনা বাহিনী এতে এক তেল খাওয়া মেশিনের মত সুচারু ভাবে মুভ করবে। ভারতের মত বিশাল ও বৈচিত্র পূর্ন ভু ভাগের প্রতি কোনা এর ফলে সেনা দ্রুত পৌঁছাতে ও ব্যাবস্থা নিতে সক্ষম হবে এবং সুচারু ভাবে সবকিছু ব্যাবহার হবে- এমনটাই জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আর্মি ভাইস চিফ AS Lamba।
প্রতি কমান্ড কে নেতৃত্ব দেবেন এক লেফটেন্যান্ট জেনারেল বা সম পদ মর্যাদার অফিসার। বর্তমান কমান্ড স্ট্রাকচার প্রধান মত তাদের কাজ হবে চিফ অফ আর্মি। যদি আন্দামান এর ট্রাই সার্ভিস কম্যান্ড মেরিটাইম কমান্ডে ঢুকে যায় তাহলে CDS আর্মড ফোর্স স্পেশাল অপারেশন ডিভিশন, সাইবার কমান্ড আর ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি দেখভাল করবেন। ভবিষ্যতে তিন সেনার যোগাযোগ আরও বাড়বে, নতুন নতুন হার্ডওয়্যার যোগ হবে, আসবে নতুন টেকনোলজি।