নীম গাছকেই পূজা করা হয় কালী রুপে আজ ৩০০ বছর ধরে। কোথায় এমন হয় বা কেন করা হয় জানেন?

নীম গাছকেই পূজা করা হয় কালী রুপে আজ ৩০০ বছর ধরে। কোথায় এমন হয় বা কেন করা হয় জানেন?

নিউজ ডেস্কঃ মা কালী কয়টি রুপ বলুন তো?সোজা কথায় বললে অনেকেরই উত্তর হবে দুটি। তবে সত্যি কি দুটি রুপ এই দেবীর? যদি রুপ দুটি হয় তাহলে সারা বিশ্ব জুড়ে এতো গুলি রুপের পূজা হয় কেন? আসলে অনেকরকম কাহিনী শোনা যায় এই দেবীকে নিয়ে। তবে জানেন কি এক নীম গাছকেও পূজা করা হয়ে থাকে মা কালী রুপে।

প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন একটি নিমগাছকে কালী জ্ঞানে পুজো করে আসছেন কাটোয়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এই গাছকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে মন্দির। যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে মা কালীর ভক্তেদের সংখ্যা। ‘ঝুপো মা’ বা ‘ঝুপো কালী’ নামে পূজিত হয়ে থাকে এই কালী। এই পূজার খ্যাতি এতোটাই ছড়িয়ে পড়ছে দিকে দিকে যার ফলে দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত সমাগন হয়ে থাকে এই পূজায়। তবে ঝুপো কালীর কোনও মূর্তি নেই। প্রাচীন নিমগাছটিই স্বয়ং মা কালী। নিমগাছের গোড়ার অংশে তৈরি হয়েছে বেদি। গাছের গুঁড়িটি ফুল মালা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মাথার মুকুট থেকে হাতের খড়গ, সবই সাজানো থাকে এই বিশেষ গাছটিকে ঘিরেই। এই পুজো শুরুর পিছনেও এক লোককথা শোনা যায়। বহু বছর আগে এই এলাকা জুড়ে ছিল বিরাট জঙ্গলে। বসতির চিহ্ন ছিল না সে সময়। দুর্ধর্ষ বর্গি ডাকাত দল সে সময় ঘাঁটি গেড়েছিল এই জঙ্গলেই।

সারাদিন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতেন তারা। সন্ধ্যা নামলেই লোকালয়ে হানা দিয়ে লুঠ করে নিয়ে আসত তারা। সে সময় ওই বর্গি দস্যুরাই নিমগাছের কাছে কালীপুজো শুরু করে ছিলেন। এক সময় শেষ হয় দস্যুদের রাজত্ব। গাছপালার জঙ্গল কেটে ওঠে কংক্রিটের জঙ্গল। তবে দস্যুদের পূজিত নিমগাছটি আর কাটা পড়েনি। আজও ওই গাছ পূজিত হয়ে আসছে ‘ঝুপমা’ রূপে। এমনিতে সারা বছর ধরেই চলে এই পুজো। তবে দেবীর আবির্ভাব তিথি ও কালীপুজোর দিন বিশেষভাবে পুজো পাঠের আয়োজন করা হয়ে থাকে। আলো দিয়ে সাজানো হয় মন্দির চত্বর। ধুমধাম করে চলে পুজো পাঠ।

বিসর্জনের দিন হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয় এখানে। দেবীর কোনও মূর্তি না থাকার কারনে বিসর্জনও হয় না ঝুপমায়ের। তবে প্রাচীন নিমগাছটির বাঁধানো ছবি নিয়ে শোভাযাত্রা বার হয় সন্ধেবেলায়। ওই দিন নগর ভ্রমণ করেন দেবী। কাটোয়াবাসীর কাছে বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে এই দেবীর। পুজোর দিন এতোটাই ভিড় হয় যে তিল ধারণের জায়গা পর্যন্ত থাকে না এই মন্দিরের চত্বরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *