নিউজ ডেস্কঃ ভারতের হাতে দুটি এয়ার ক্র্যাফট ক্যারিয়ার। দুটি তৈরি চলছে। এবং বেশ কয়েকটি তৈরি করার কথোপকথন চলছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটিও এয়ার ক্র্যাফট তৈরি তো দূরের কথা কিন্তেও পারেনি পাকিস্তান। কিন্তু কেন?
প্রথমত পাকিস্তানের কাছে এয়ার ক্র্যাফট ক্যরিয়ার কেনার মতো অর্থনৈতিক সমর্থ নেই। ভারতীয় এয়ার ক্র্যাফট ক্যরিয়ার আই এন এস বিক্রমাদিত্য ক্রয় করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রায় ১৯,০০০ কোটি টাকা। এবং রক্ষনাবেক্ষনের জন্য প্রতিবছর প্রায় ০.৫ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৫০০০ কোটি টাকা খরচ করতে হয় ভারত সরকারকে। আর সেখানে পাকিস্তানের মোট মিলিটারি বাজেট হল ৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ একটি এয়ার ক্র্যাফট কিনতে গেলে পাকিস্তানকে মিলিটারি বাজেটের পুরোটাই নেভি বাজেটের উপর খরচ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত এয়ার ক্র্যাফট তো দূরের কথা পাকিস্তানের কাছে অনেক যুদ্ধাস্ত্রই নেই। পাকিস্তানের কাছে সবচেয়ে বড় যে যুদ্ধজাহাজ তা হল ফ্রিগেটস। তাদের কাছে ক্রুসার, ডেস্ট্রায়ার্স, এর মতো একাধিক অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের সরঞ্জামই নেই। এবং এসব ছাড়া একটি এয়ার ক্র্যাফট পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব।
তৃতীয়ত পাকিস্তানের দরকারই হয়না এয়ার ক্র্যাফট ক্যারিয়ারের। কারন তাদের সমুদ্র উপকুলের পরিমাণ মাত্র ১০৪৬ কিলোমিটার। যেখানে ভারতবর্ষের ৭৫১৬ কিলোমিটার। এবং পাকিস্তানের মিলিটারি বেশিরভাগই স্থল নির্ভর ( ভূমির বেশিরভাগ অংশই ভারতবর্ষ এবং আফগানিস্থানের সাথে ভাগ করে নিয়েছে)। সুতরাং সেই কারনেই এয়ার ক্র্যাফট ক্যারিয়ারের মতো বড় যুদ্ধজাহাজের দরকার নেই।
চতুর্থত এবং শেষ কারন হল পাকিস্তানকে এয়ার ক্র্যাফট ক্যরিয়ার দেওয়ার মতো কোন দেশ নেই। এবং পাকিস্তানের কাছে এমন প্রযুক্তিও নেই যে তারা এয়ার ক্র্যাফট ক্যরিয়ারের মতো বড় যুদ্ধজাহাজ তৈরি করবে। বর্তমানে মাত্র ৯টি দেশের কাছে এয়ার ক্র্যাফট ক্যারিয়ার আছে ইংল্যান্ড, অ্যামেরিকা, ফ্রান্স, ইটালি, থাইল্যান্ড, স্পেন, ভারত, রাশিয়া এবং চিন। একমাত্র চিন ছাড়া তাদেরকে এয়ার ক্র্যাফট ক্যারিয়ার দেওয়ার মতো কেউ নেই। বর্তমানে চিন নিজেদের এয়ার ক্র্যাফট তৈরিতে ব্যস্ত।
পাকিস্তানের এয়ার ক্র্যাফট ক্যরিয়ারের থেকে বড় সমস্যা হল অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তাই শত্রুপক্ষের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার উপর নজর দেওয়া উচিৎ বলে মত আন্তর্জাতিক মহলের। অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক, উন্নয়ন, রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো একাধিক সমস্যা বর্তমানে গ্রাস করছে পাকিস্তানকে।