নিউজ ডেস্কঃ গিরগিটির নামক এই ছোট সরীসৃপ প্রজাপতি প্রাণীটিকে আমরা সকলেই চিনে। ঝোপঝাড় ও জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা এই প্রাণীদের সাথে আমাদের প্রায় ই সাক্ষাৎ হয়। খুবই সাধারণ এই প্রাণী বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ উপকারী।কিন্তু কখনো আপনি রক্তচোষা গিরগিটির নাম শুনেছেন? নাম শুনলেই গায়ে কেমন কাটা দেয় ভয়ে।তাই না?কিন্তু নাম শুনে যত ভয়ঙ্কর লাগুক এই প্রাণী কিন্তু আসলে খুবই উপকারী। আর রক্তের সাথে নেই এর কোনো সম্পর্ক। এই উপকারী গিরগিটির ইংরেজি নাম Common Garden Lizard এবং বৈজ্ঞানিক নাম Calotes versicolor। এর লেজসহ দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ থেকে ৩৭ সেন্টিমিটার।
এই গিরগিটির সমস্ত শরীর মাঝে মাঝে গারো লাল বর্ণের হয়ে যায় তা থেকেই এর নাম রক্তচোষা হয়েছে। কুসংস্কারের কারণে অনেকে ভাবেন যে এই গিরগিটির পাশ দিয়ে গেলে গিরগিটি মানুষের বা শুষে নেয় তার ফলে এর গায়ের রং এরকম লাল হয়ে যায় কিন্তু,এর কোনো বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই।এই লাল হয়ে উঠার কারণটি হলো- এই প্রাণীটি যখন কোনো কারণে বিপদগ্রস্থ হয় বা ভয় পায়, তখন সে দ্রুত তার ঘাড় থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত অবস্থিত মেলামিনগুলোকে পরিবর্তন করে লালবর্ণ ধারণ করে ফেলে। যেহেতু লাল হচ্ছে একটি এলার্মিং কালার; তাই গিরগিটির শরীর দেখে বিভিন্ন শিকারি প্রাণী ওর থেকে দূরে সরে যায়। এই লাল রঙ তৈরি করে সে শত্রুকে ভয় দেখায়।
এদের প্রধান খাবারই হলো পোকামাকড়। শাকসবজির ক্ষতি করে এমন পোকামাকড় খেয়ে এরা পতঙ্গ দমনে বিরাট ভূমিক পালন করে।অথচ, এই ভুল নামের জন্যই মরছে উপকারী ‘গিরগিটি’।আতঙ্কিত লোকজন দেখামাত্রই ইটচাপা কিংবা লাঠির আঘাতে মেরে ফেলে এই সরীসৃপ প্রজাতিকে।অথচ এই প্রাণীটিই আমাদের প্রকৃতির পরম বন্ধু।
সারাদেশেই ঝোপেঝাড়ে,মাঠে ,কোন খোলা জায়গায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। শীতকালে এদের ঝোপঝাড়ের ডালের উপর লম্বা হয়ে শুয়ে রোদ পোহাতে দেখা যায় । কিন্তু বর্তমানে আমাদের কুসংস্কারের ফলে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে।