নিউজ ডেস্কঃ পুরাণ ঘাঁটলে একাধিক পশু পাখির উল্লেখ পাওয়া যায়। বা ধরুন মহাভারত বা রামায়নের মতো একাধিক জায়গায় একাধিক পশু পাখির উল্লখ পাওয়া যায়। ময়ূর। সেভাবে এখন দেখা না মিললেও একরকম ভাবে একে প্রেমের প্রতিক মানা হয়ে থাকে। শ্রীকৃষ্ণের মুকুটে ময়ূরের পালক লক্ষ্য করা যায়।
স্ত্রী পাখি কে ‘ময়ূরী’ নামে পরিচিত। ময়ূর হল লাবণ্য ও সৌন্দর্য্যের প্রতীক। 1963 সালে ময়ূর, ভারতের জাতীয় পাখি হিসাবে ঘোষিত হয়। ভারতের প্রায় সব অংশে ময়ূরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আমাদের সকলের ই ময়ূরের সঙ্গে কম বেশী পরিচিতি আছে। এশিয়ায় প্রাপ্ত ময়ূরের প্রজাতি দু’টি হল নীল ময়ূর আর সবুজ ময়ূর। এই নীল ময়ূর ভারতের জাতীয় পাখি।এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে সবুজ ও নীল ময়ূরের পাশাপাশি সাদা ময়ূরও দেখা যায়। এদের দেহ সাদা ও চোখ নীল। প্রকৃতপক্ষে নীল ময়ূরই জিনগত মিউটেশনের কারণে সাদা বর্ন ধারণ করে। তবে ভারতীয় ময়ূরের মত সাদা ময়ূরের পেখমে সোনালী পালক বা নীল রংয়ের বড় ফোঁটা নেই। সাদা ময়ূর সম্পূর্ণ সাদা।
ময়ূরের সব প্রজাতি ই সাধারণত বনে বাস করে। এরা মাটিতে বাসা বাঁধে এবং চারা গাছের অংশ, কীটপতঙ্গ, বীজের খোসা, ফুলের পাপড়ি এবং ছোট ছোট প্রাণী ইত্যাদি খায়। তবে সংরক্ষিত এলাকায় এরা মাঝে মাঝে খাবারের খোঁজে লোকালয়েও চলে আসে। এরা সর্বভূক। অন্যান্য পাখির মতো ময়ূরের ও ডিম ফুটে বাচ্চা হয় এবং ছোট বাচ্চা গুলো সাধারণত মায়ের সাথে ঘুরে ঘুরে খাবার খায়।
পুরুষ ময়ূর দেখতে খুব সুন্দর হলেও এদের কণ্ঠস্বর কর্কশ। ময়ূরের পালককে অনেকেই মঙ্গলের চিহ্ন হিসেবে ভেবে থাকে। সে জন্যই যে কোনো শুভ কাজে বা মঙ্গলের চিহ্ন হিসেবে ময়ূরের পালক ব্যবহার করা হয়। ময়ূরকে ধন-সম্পদের প্রতীক হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। আর এই কারণেই বাড়িতে ধন-সম্পদের বৃদ্ধি করতে অনেকে বাড়িতে ময়ূরের পালক রাখেন। ময়ূরের পেখম নিয়েও বিভিন্ন কাহিনী শোনা যায়। তবে, স্ত্রী ময়ূরকে আকৃষ্ট করার জন্য ই পুরুষ ময়ূর পেখম তোলে। এ কারণেই এরা অত্যন্ত আকর্ষণীয়। স্ত্রী ময়ূরও পেখম তোলে তবে তা শত্রুকে ভয় দেখানোর জন্য। স্ত্রী ময়ূরের পেখম আকারে অনেক ছোট।সাধারনত শত্রুর কাছ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য Galliformes বর্গের প্রাণীদের মত এরাও এদের মেটাটারসাল (পায়ের নখর) ব্যবহার করে।
তবে,বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে বিশ্বব্যাপী এই পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে এরা বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত।