ওয়েব ডেস্কঃ উপোষ রাখা। কথাটা শুনলেই দিদা- ঠাকুমাদের কথা মনে পরে যায় আমাদের। আর পরবেই না বা কেন বলুন তো? ইদানিংকালে আর মা কাকিমাদের তো উপোষ করতে দেখা যায়না। তাদের অনেকের কাছেই এটা একটা ডিসগাস্টিং ব্যপার। এতো সেকেলে নিয়ম এর কেউ মানে নাকি? এতো কুসংস্কার। কথাগুলি আমরা প্রায়শয় শুনে থাকি। আর শুনবোই বা না কেন? ঠাকুমা বা দিদারা তো আর উপোষের সঠিক কারন দর্শাতে পারেননা। তাই তাদের শুনতে হয়। এপ্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো যে মুনি ঋষিরা যে নিয়ম আমাদের জন্য বানিয়ে রেখে গেছে তা সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান কতোটা? এর বিজ্ঞান ভিত্তিক কারন গুলি আমরা কোনও দিন ভেবেই দেখেনি। বা পরেই দেখেনি। ঠিক যেমন নিয়ম করে উপোষ রাখাটা।
মাঝে মাঝে উপোস রাখলে পাকস্থলী বিশ্রাম পায় এবং তার কর্মশক্তিও অক্ষুন্ন থাকে। চন্দ্রসূর্যের গতি অনুসারে যেমন সমুদ্রে জোয়ার ভাটার বেগ কমবেশি হয়,শরীরের রসেরও তেমন হয়ে থাকে। এই কারনে একাদশী,পূর্ণিমা,অমাবস্যা তিথিতে একবেলা কিছু লঘু আহার করা কর্তব্য। শরীরের অম্ল্যাধিক্যে এইভাবে উপোস দিলে অম্ল উপশমিত হয়ে দেহগত উপাদানে সাম্যতা আনে। প্রবাদ আছে, ডান নাক দিয়ে শ্বাস বহনকালে আহার করা শ্রেয়, বাম নাকে শ্বাস বহনকালে জল পান করা উত্তম।
এই সঙ্গে আরও জেনে রাখা দরকার যে, পাকস্থলীতে খাদ্য না পড়লে পাচকরস নিঃসৃত হয় না। পাকস্থলীতে যেমন খাদ্য পড়বে সঙ্গে সঙ্গে পাচকরসও পাকস্থলীর গা থেকে সেইভাবে বের হয়ে ভুক্তদ্রব্যের সঙ্গে মিশে যায়। উপোসের অর্থ খাদ্য গ্রহণ না করা। পেটে খাদ্যদ্রব্যের অনুপস্থিতিবশত খাদ্যের নিজের অম্লরস উৎপাদিত হচ্ছে না, উপরোক্ত পাকস্থলী থেকে পাচক রস নিঃসৃত হচ্ছে না, ফলে অম্লরসের যোগানই বন্ধ হয়ে যায় , কাজেই স্বাভাবিক ক্ষারধর্মই প্রবল হয়ে শরীর সুস্থ করে। অস্ত্রের ধার রক্ষা করতে যেমন শান দেওয়া হয় তেমনই উপোসও শরীরকে শানিয়ে রাখে। অর্থাৎ উপোসেই শরীরকে ক্ষারত্ব বাড়ে।