গ্রীষ্ম। মাথার ওপর দাপট রোদের, মিনিটে মিনিটে তেষ্টায় প্রাণ ওষ্ঠাগত। এই অবস্থায় এক নিঃশ্বাসে এক বোতল জল খেয়ে নেওয়ায় যদি আপনার অভ্যাস হয় তাহলে খুব শীঘ্রই তা বদলে ফেলুন। জল খাওয়ার উপকারিতা ভুরি ভুরি,শরীর সুস্থ ও নীরোগ রাখতে জলের বিকল্প নেই। জল খেলে মাথাব্যথা কমে। পেশির এনার্জি বাড়ায়। জল ত্বককে সুন্দর রাখে ও ওজন কমায়। শরীরের জলীয় পদার্থের ভারসাম্য ঠিক রাখে। শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গকে সুস্থ রাখে জল। ডায়েটিশিয়ান থেকে ডাক্তার প্রত্যেকেই সুস্থ থাকতে বা ওজন কমাতে পর্যাপ্ত জল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে জল যদি ঠিকঠাক নিয়ম মেনে না খান তবে গুরুতর শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন আপনি।
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জল খেলে হাইপোনাট্রেমিয়া হতে পারে যার ফলে শরীর থেকে কমে যায় সোডিয়ামের পরিমাণ।বমি বমি ভাব, মাথা ধরা, শ্বাস কষ্ট, পেশিতে টান, দুর্বলতা দেখা দিতে পারে শরীরে। এই জন্যই যখন তেষ্টা পাবে তখনই পর্যাপ্ত পরিমাণের জল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেকেই জল ছাড়া খাবার খেতে পারেন না। কিন্তু এই অভ্যাস ক্ষতিকারক। যার ফলে হজমে সমস্যা হতে পারে। খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে পরিমাণমত জল খেলে হজম ভাল হয়।
কিডনিতে সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া প্রয়োজনের বেশি জল খাওয়া উচিত নয়। কারণ কিডনি যদি অনাবশ্যক ক্ষতিকারক পদার্থসমূহ শরীর থেকে দূর করার কাজে ব্যর্থ হয় তাহলে শরীরের ভিতর জমা হতে থাকবে দূষিত পদার্থ। তাই কিডনির অবস্থা বুঝেই জল খাওয়া উচিত।
বেশি জল খেলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। ফলে বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, ঘুম ঘুম ভাব, অতিরিক্ত প্রস্রাব এবং মাথাব্যথা হতে থাকে। বেশি জল খেলে শরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায়। হার্টের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে।কোষে অতিরিক্ত জল গেলে শরীরের কোষ ফুলতে থাকে। মাথার কোষও ফুলে যেতে পারে। পরিণাম ব্রেন স্ট্রোক। অতিরিক্ত জল শরীরের পটাসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যার জেরে বুকে ব্যথা শুরু হয়। লিভারের সমস্যা বাড়তে থাকে।, প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল শরীরে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
দিনে আট গ্লাস, অর্থাৎ দু লিটার জল খাওয়া প্রয়োজন কিন্তু খুব গরমে তিন লিটার খাওয়া যায়। তবে তা একসঙ্গে নয়। গোটা দিনটা জুড়ে সময়মত অল্প অল্প করে জল খাওয়া উচিত।
সারাদিনে কাজের ধরন অনুযায়ী জল খাওয়া উচিত। কেউ যদি খুব কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন তাহলে গরমে ঘামের পরিমানও অধিক হবে। সেক্ষেত্রে জলের পরিমান কিছুটা বাড়ানোই যায়।