নিউজ ডেস্কঃ বর্তমান তরুণ সমাজে প্রচন্ড পরিচিত একটি নাম, ‘চে’…সত্যিই কি তাই? স্টাইলিশ টি-শার্টের সামনে পেছনে আজ ‘চে’ সত্যিই উজ্জ্বল! কিন্তু বুকপকেটের নিচের ঐ মনটাতে, ক্রমেই আধুনিকতার দাবি করতে থাকা আজকের এই তরুণদের চেতনাতে… চে গেভারা/ গুয়েভারা, প্রকৃতপক্ষে ‘আর্নেস্তো গেভারা দে লা সেরনা’ নামের ব্যক্তির পরিচয় ক্রমশই হচ্ছে বিলুপ্ত। ‘চে’ নামের খুব জনপ্রিয় ‘ব্র্যান্ড’টি অস্পষ্ট করে দিচ্ছে ব্যক্তি চে’কে।
‘চে’ তার প্রকৃত নাম নয়, যদিও এটিই সবচেয়ে বেশি পরিচিত তার ক্ষেত্রে। স্প্যানিশ ভাষায় ‘চে’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘প্রিয়’; কিউবায় সফল বিপ্লবের পর সেখানকার অধিবাসীগণ তার নাম দিয়ে দেয়-‘চে’। তিনি এই নামটিকে এত বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলেন যে ১৯৬০ থেকে ১৯৬৭ সাল, অর্থাৎ তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তাঁর স্বাক্ষর হিসেবে ব্যবহার করতেন শুধুই এই শব্দটি-‘চে’।
“চে কী ছিলেন?”-এই প্রশ্ন না করে বোধহয় প্রশ্ন করা উচিত, “চে কী ছিলেন না?”; একাধারে মার্ক্সবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ, সামরিক তত্ত্ববিদ এবং অবশ্যই যে পরিচয়টি চে’কে ‘চে’ করে তোলার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছে- তিনি ছিলেন কিউবা বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্ব।
চে গেভারা ১৯৪৮ সালে বুয়েনস এয়ারস বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিত্সা বিষয়ে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি হন। ১৯৫১ সালে লেখাপড়ায় এক বছর বিরতি দিয়ে আলবার্টো গ্রানাডো নমক এক বন্ধুকে সাথে করে মোটর সাইকেলে দক্ষিণ আমেরিকা ভ্রমনে বেরিয়ে পড়েন যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পেরুর সান পেবলোর লেপার কলোনিতে স্বেচ্ছা সেবক হিসেবে কয়েক সপ্তাহ কাজ করা| মাচু পিচ্চুর যাওয়ার পথে তিনি প্রতন্ত অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের চরম দারিদ্র দেখে মর্মাহত হন| এ কৃষকরা ধনি মহাজনদের অধিনে থেকে ছোট ছোট জমিতে কাজ করত| তার ভ্রমণের পরবর্তি সময়ে তিনি লেপার কলোনিতে বসবাসকারী মানুষের মাঝের ভাতৃত্ব ও সহচার্য দেখে অভিভূত হন| এই অভিজ্ঞতা থেকে তার ডায়েরীতে (The Motorcycle Diaries) তিনি লিখেছেন, ‘মানব সত্ত্বার ঐক্য ও সংহতির সর্বোচ্চ রুপটি এসকল একাকী ও বেপরোয়া মানুষদের মাঝে জেগে উঠেছে’। তার এই দিনলিপি নিউয়র্ক টাইমস এর বেস্ট সেলার এবং পরে একই নামে (The Motorcycle Diaries) চলচিত্র বের হয় যা পুরস্কৃত হয়েছিল।