নিউজ ডেস্কঃ রাখি বন্ধন এই উৎসবটি বর্তমান দিনে পালন করা হয় ভাই এবং বোনের মধ্যে। এছাড়াও এই উৎসবটি প্রথম যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রচালিত করেছিলেন তখন হিন্দু ও মুসলমানদের পালন করা হত।এই তো গেল মানুষদের কথা কিন্তু আপনারা কি জানেন যে এই বন্ধন শুধুমাত্র মানুষদের মধ্যেই হয়েছে তা নয় এটি দেব দেবীদের মধ্যেও পালন করা হয়েছে আর তাই ভগবানদের থেকেই রাখিবন্ধনের প্রচলন।তাহলে জেনে নিন যে কোনো দেব দেবীদের এই পবিত্র বন্ধন পালন করার পর থেকে প্রচালিত হয়েছিল।
কৃষ্ণ ও দ্রৌপদী
একবার আঘাতে কৃষ্ণের হাতে ধারালো অস্ত্রে আঘাত লাগার কারনে রক্তপাত শুরু হয়েছিল তখন পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। আর এরপর থেকে কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন।তাই যখন বহু বছর পরে, পাশাখেলায় কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করার জন্যে তার বস্ত্রহরণ করেন তখন কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করেন।মনে করা হয় যে হয়ত এইভাবেই রাখীবন্ধনের প্রচলন হয়।
বলিরাজা ও লক্ষ্মী
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী,একসময় বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে তার ভক্ত দৈত্যরাজা বলির রাজ্য রক্ষা করতে চলে গিয়েছিলেন।আর তখন বিষ্ণু দেবের স্ত্রী লক্ষ্মী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য বলিরাজের কাছে এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে গিয়েছিলেন।ওখানে গিয়ে মাতা লক্ষ্মী দৈত্যরাজা বলিকে জানান যে তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ।তাই যতদিন না তার স্বামী ফিরে আসেন ততদিন পর্যন্ত তাকে যেন আশ্রয় দেন। বলিরাজা মাতা লক্ষ্মীকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়ে যান।এরপর শ্রাবণ পূর্ণিমা উৎসবে লক্ষ্মী বলিরাজার হাতে একটি রাখী বেঁধে দেন।এবং এরজিজ্ঞাসা করলে লক্ষ্মীদেবী বলিরাজকে তার আত্মপরিচয় দিয়ে সব কথা খুলে বলেন। এতে বলিরাজা দেবী লক্ষ্মীর প্রতি মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুদেবকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। বলিরাজা বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেন।বলা হয় এরপর থেকেই শ্রাবণ মাসে পূর্ণিমা তিথিটি বোনেরা রাখীবন্ধন হিসেবে পালন করে।
সন্তোষী মা
পৌরাণিক আরেকটি কাহিনী অনুযায়ী,বলা হয় যে একবার রাখীবন্ধনের দিন গনেশের হাতে তার বোনের একটি রাখী বেঁধে দেন। গণেশের হাতে রাখি দেখে গনেশের দুই ছেলে শুভ ও লাভের হিংসে হয়। কারন তাদের কোনো বোন ছিল না।তাই তখন তারা তাদের বাবার কাছে একটা বোনের বায়না ধরে।আর তাই গণেশ তখন তাঁর দুই ছেলের সন্তোষ বিধানের জন্য দিব্য আগুন থেকে একটি কন্যার জন্ম দেন। এই দেবী হলেন গণেশের মেয়ে সন্তোষী মা। তারপর সন্তোষী মা শুভ ও লাভের হাতে রাখী বেঁধে দেন।