নিউজ ডেস্কঃ এই দশক যে ভারত আকাশ পথে রাজত্ব করবে তা বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে সুখই সু ৩০ থাকার পর রাফালে ভারতে আসার পর ভারতের বায়ুসেনার ক্ষমতা অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কখনও ভেবে দেখেছেন যে আজ থেকে ১০ বছর বা ১৫ বছর পর বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের সংখ্যা কি হবে? আসলে হয়ত এমন প্রশ্ন দেখে অনেকে ভাবতে পারে যে এখন ই ১০-১৫ বছর পরের কথা ভাবা হচ্ছে? আসলে একটি যুদ্ধবিমান তৈরি করে টেস্ট করা এবং প্রথমবার আকাশে উড্ডয়ন করতে প্রায় ১৫-১৭ বছর গড় সময় লেগে যায়। মানে আমেরিকা থেকে শুরু করে রাশিয়া ফ্রান্স বা সদ্য সেনাবাহিনীতে যুক্ত হওয়া রাফালের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে।
২০৩৫ এর মধ্যে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অন্তত ৩৫০ ফ্রন্টলাইন যুদ্ধবিমান অবসর করতে চলেছে। যার মধ্যে রয়েছে ১০০+ মিগ ২১(ট্রেনিং বিমানের সংখ্যা ধরে), ৯০+ জগুয়ার , ১১০+ মিরাজ ২০০০ ও মিগ ২৯। এছাড়াও প্রথম ব্যাচে আসা ৫০ টি সুখোই সু ৩০ MKI অবসরে যাবে ২০৩৫ এ। পাশাপাশি ধাপে ধাপে ১২০+ মিগ ২৭ অবসরে গেছে, যার বদলে নতুন যুদ্ধবিমান এখনও আসেনি। অর্থাৎ বর্তমান ফ্লীট বজায় রাখতে গেলে ২০৩৫ এর মধ্যে এয়ারফোর্স কে অন্তত ৪৭০ টি নতুন যুদ্ধবিমান ক্রয় করতে হবে যা এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। এয়ারফোর্স এর বর্তমান ফাইটার জেট ক্রয়ের লিস্ট দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে এয়ারফোর্স আপাতত ৮ টি সুখোই ৩০ , ২১ টি মিগ ২৯, ৩৬ টি রাফায়েল ও ১২৩ টি তেজস মার্ক ১ সহ মোট ১৮৮ টি যুদ্ধবিমান আপাতত ক্রয় করছে। সুতরাং এখনও ২৫০+ ফাইটার জেটের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এই ঘাটতি পূরন হবে কি ভাবে?
বিশেষজ্ঞদের মতে এই ঘাটতি পূরনে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে তেজস মার্ক ২। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৬ এও যদি এর প্রোডাকশন শুরু হয় তাহলে ২০৩৫ এর মধ্যে অন্তত ২০০ মার্ক ২ সার্ভিসে আসবে যদি প্রোডাকশন রেট বছরে ২৫ হয়। এরপর যদি ২০৩২ এর মধ্যেও AMCA এর প্রোডাকশন শুরু হয় তাহলে ২০৩৫ এ অন্তত ৪০+ AMCA সার্ভিসে আসবে এমটাই মত একাধিক মহলের।
প্রজেক্টে দেরি হয় সর্বদা, সবকিছু ধরেও যদি হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাচ্ছে ২০৩৫ এর মধ্যে এয়ারফোর্স এর কাছে অন্তত ৩৮ স্কোয়াড্রন ফাইটার জেট থাকছে। কিন্তু পাকিস্তান ও চীন উভয় কে একসাথে মোকাবিলা করতে গেলে এয়ারফোর্স এর অন্তত ৪২ স্কোয়াড্রন জেট থাকা দরকার, সুতরাং ৪ স্কোয়াড্রন প্রায় ৭২+ বিমানের অভাব থাকছে। আদৌ কি তা পূর্ণ হবে? ২০১৭-১৮ সালে MMRCA -2 চুক্তি হওয়ার একটা বিশাল সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল,সম্ভবত হয়েও যেত, তাহলে আর এই ঘাটতি হয়ত থাকত না। কিন্তু সেইসময় রাফায়েল দূর্নীতির মতো মিথ্যা অভিযোগের জন্য যা সম্ভব হয় নি, যার খেসারত ভবিষ্যতে এয়ারফোর্স কে দিতে হতে পারে এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
তবে ৩৮ স্কোয়াড্রন যথেষ্ট এর সাথে S-400 এর মত এয়ারডিফেন্স থাকছে, আরো অতিরিক্ত রেজিমেন্ট S-400 আসতে পারে। সুতরাং বিমান বাহিনী যথেষ্ট শক্তিশালী থাকবে। শুধু সেনাবাহিনী কে নিয়ে যদি রাজনীতি না হয়
তাহলে ভারতবর্ষ কে চীন,পাকিস্তানের মতো শত্রু দেশ চোখে চোখ রেখে কথা বলার মতো ক্ষমতা রাখবেনা।