১৯৬৫ সালে চীনকে সঠিক জবাব দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। কি করেছিলেন জানেন?

১৯৬৫ সালে চীনকে সঠিক জবাব দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। কি করেছিলেন জানেন?

নিউজ ডেস্কঃ অটল বিহারী বাজপেয়ী। স্বাধীন ভারতের অন্যতম প্রিয় এবং জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। চীন বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনোরকম বড় সিদ্ধান্ত নিতে তিনি একটুও পিছুপা হননি। তার প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। তিনিই প্রথম ভারতবর্ষকে সামরিক ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা জন্য এগিয়ে নিয়ে গেছেন। চীনের বিরুদ্ধে তিনি একবার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

চিনা দূতাবাসে ৮০০ ভেড়া পাঠিয়েছিলেন বাজপেয়ী,  আর তা আজও ইতিহাস হয়ে আছে

সালটা ১৯৬৫। তখনও চিন ভারত যুদ্ধের ক্ষত সারেনি। তিন বছর আগেই চিনা সেনার অগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল ভারতবর্ষ। এরপরেও যুদ্ধের হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। সেই সময়েই চিনের শীর্ষ নেতৃত্বকে রীতিমতো মুখের ওপর জবাব ছুড়ে দিয়েছিলেন জনসঙ্ঘের উদীয়মান রাজনীতিক অটলবিহারী বাজপেয়ী।

যদিও কারণটাও ছিল বেশ মজার। ১৯৬২ সালে ভারতকে আক্রমণের কারণ হিসেবে বেশ কয়েকটি অভিযোগ তুলেছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। আর তার মধ্যে একটি অভিযোগ ছিল, যে ভারতীয় সেনারা চিনের ৮০০টি ভেড়া এবং ৫৯টি ইয়াক চুরি করে নিয়ে গেছে। বেজিংয়ের ভেড়া চুরির অভিযোগের জবাব দিতেই সিদ্ধান্ত নেন বাজপেয়ী। দিল্লির চিনা দূতাবাসে একটি ট্রাকে চাপিয়ে ৮০০টি ভেড়া পাঠিয়েছিলেন অটলবিহারী। ভেড়াগুলির গায়ে লেখা ছিল, ‘আমাদের খাও, কিন্তু যুদ্ধের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাও।’

ভারতীয় রাজনীতিতে এরকম উত্তর সচরাচর দিতে দেখতে পাওয়া যায়নি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে অজাতশত্রু নেতা বলে মনে করা হয় ভারতীয় রাজনীতিতে। সংসদে বা সংসদের বাইরে তাঁর রসবোধ ও কবি মনের পরিচয় মানুষ পেয়েছে অনেকবার। শুধু বক্তৃতাতেই নয়, আচরণেও যে তিনি রসিক।

এই মজাকে মজা হিসেবে অবশ্য নিতে পারেনি চীন। বেজিং থেকে জবাব দেওয়া হয়েছিল। জবাব পেয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে বেজিং জানতে চেয়েছিল ভারত কি মশকরা করতে চাইছে? সেই চিঠিতে চিনের বক্তব্য ছিল,  যে “চিনের জনগণকে অপমান করা হয়েছে। আর এই ব্যাপারে অটলবিহারী বাজপেয়ীকে মদত রয়েছে শাস্ত্রীর সরকারের।” এরও প্রত্যুতর দিয়েছিল ভারত। প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছিল, “এটা দেশের মানুষের আবেগ। এর সঙ্গে সরকারের কোনও যোগাযোগ নেই। এই প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণই ছিল তাই।”

তবে সেবারে অটলবিহারী বাজপেয়ীর এহেন জবাবের পরেও মতিগতি বদলায়নি বেজিংয়ের। ১৯৬৭ সালে ফের ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে ভেড়া চুরির অভিযোগ তুলেছিল চিন। একই সঙ্গে বদলায়নি বেজিংয়ের আগ্রাসন নীতিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *