নিউজ ডেস্কঃ ইসলামিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে যে ফ্রান্স কোনমতে পিছুপা হবেনা তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট। এবং ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের সাথে জোট গড়ার পাশাপাশি কয়েকটি দেশকে উচিৎ শিক্ষা দিতে চলেছে ফ্রান্স।
তথা কথিত বয়কটের কারনে ফ্রান্সের বড় মাসুল চোকাতে হচ্ছে এবার পাকিস্তানকে। কিছুদিন আগে কট্টর ইসলামিক জঙ্গীদের জন্য রক্তাক্ত হয়েছিল স্বপ্নের শহর প্যরিস। তার প্রতিবাদ করায় ম্যকরনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ফ্রান্সের বিরুদ্ধে লাগাতার হুমকি দিয়েছে ইমরান নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান। তারপরও ফ্রান্স পাকিস্তানকে নিজের স্থান পরিষ্কার করে দিল। বেশ কয়েকদিন আগেই জার্মানি পাকিস্তানকে তাদের আগস্টা ক্লাস সাবমেরিনের জন্য AIP প্রযুক্তি দিতে অস্বিকার করেছিল। এবার ফ্রান্স পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক শক্ত পদক্ষেপ নিল।
প্রথমত ফ্রান্স আগস্টা ক্লাসের সাবমেরিনের সমস্ত আপগ্রেড স্থগিত রেখেছে।
দ্বিতীয়ত পাক বিমানবাহিনীর একটা বড় অংশ জুড়ে থাকা স্ট্রাইকার মিরাজ ৩/৫ এর ফ্লিট। পাকিস্তানি বিমান বাহিনীতে বর্তমানের ১৩৫ টি মিরাজ ৩ ও ১৩৯ মিরাজ ৫ যুদ্ধবিমান আছে। স্পেয়ার পার্টস এর অভাবে এর অর্ধেকই আকাশে উড্ডয়নের যোগ্য নয়। তবে এবার এই বিমানগুলির সম্পূর্ণ আপগ্রেড ও স্পেয়ার পার্টস সাপ্লাইয়ের প্রসেস বন্ধ করতে চলেছে ফ্রান্স। এই মিরাজ 5 বোম্বার যুদ্ধবিমান দিয়েই 2019 সালে পাকিস্তান ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল এবং এইচ-ফোর বোম দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি কোয়াটার কে আক্রমণ করতে চেয়েছিল। তবে সেই বোম নিজের লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হয়।
তৃতীয়ত ফ্রান্স পাকিস্তানকে তার Spada-2000 এয়ারডিফেন্স সিস্টেম আপগ্রেড করার বিষয়টিও নাকজ করে দিয়েছে। এটা একটা সমীহ করার মত এয়ার ডিফেন্স। ভারতের মিরাজ-২০০০ ও মিগ-২৯ এর মতো যুদ্ধবিমান কে আটকাতে বেশ কার্যকরী ছিল।
চতুর্থত ফ্রান্স পাকিস্তানের কোন ইঞ্জিনিয়ারকে কাতারের রাফাল যুদ্ধবিমান এর রক্ষনাবেক্ষনের থেকে কাতারকে বিরত রাখতে বলেছে। ফ্রান্স কাতার ও ভারত বর্তমানে রাফালের সর্ব শক্তিশালী ভার্সনটি ব্যবহার করে থাকে। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের কোন ইঞ্জিনিয়ার যদি কাতারের রাফাল যুদ্ধবিমান এর রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সংযুক্ত থাকে সে ক্ষেত্রে রাফাল যুদ্ধবিমান এর প্রযুক্তি পাকিস্তানি চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে আশা করছে সামরিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও আপনার শত্রুর কাছে থাকা অস্ত্রের সম্পর্কে জানা মানেই এই নয় যে আপনি তাকে কাউন্টার করতে পারবেন। তবে যাই হোক ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ ভারতকে অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে বলে মত আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের।
এতদিন ভারতের কাছে অস্ত্রের পরিমাণ বেশি থাকলেও পশ্চিমে অস্ত্রের আধুনিকতার জোরে পাকিস্তান নিজেকে ভারতের থেকে অনেকটা ভালো স্থানে রেখেছিল। তবে আস্তে আস্তে সেই অংশটি ও পাকিস্তানের হাত থেকে চলে যাচ্ছে যা ভবিষ্যতে পাকিস্তানের জন্য খুব যন্ত্রণাদায়ক হতে চলেছে। পশ্চিমী অস্ত্রের ঘাটতি যত বেশি হবে পাকিস্তানের, ভারতের জন্য ততটাই লাভ। যতই পাকিস্তান চীন থেকে অস্ত্র ক্রয় করুক না কেন? কোন মূল্য নেই কারণ চীনের অস্ত্রের মানে এখনো অত্যন্ত নিম্নমানের বলে মনে করেন সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। চীনের অস্ত্রের মান ভালো হলে পাকিস্তান কখনোই থান্ডার বিমানকে নিজের দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখত না ২০১৯ সালে ভারত-পাকিস্তান আকাশযুদ্ধে। জেএফ ১৭ কে রেখেছিল মিরাজের পিছনে। অন্য দিকে তাদের এফ-১৬ ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিরুদ্ধে আগ্রাসন দেখিয়েছিল। ঠিক একই ভাবে যেখানে যুদ্ধ হচ্ছিল সেখানে ছিল সুইস এরিআই এ্যওয়াক্স। অন্যদিকে দঃ অঞ্চলে মোতায়েন ছিল চাইনিজ ZDK-03 এ্যওয়াক্স এর থেকে বোঝা যায় চাইনিজদের মান এখনও কোথায়। অনেক বিশেষজ্ঞদের ধারণা যে পাকিস্তান নিজের ব্লান্ডার এর ব্লক-৩ এর জন্য চাইনিজ রেডার একেবারেই চাইছে না। তাদের লক্ষ সুইডেনের এসা রেডার। কিন্তু চাইনিজ চাপে জঘন্য klj-7a রেডার থাকছে ব্লক-৩ ব্লান্ডারে।
সর্বশেষে পাকিস্তানের বয়কট ফ্রান্সের জন্য ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক বেশী মজবুত হয়েছে। ফলে ফ্রান্সের ভেটো ক্ষমতা ভারতের পক্ষে এরপরে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হবে বলে আশা করছে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ।