নিউজ ডেস্কঃ এফ ৩৫। বর্তমানে এই যুদ্ধবিমান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ যুদ্ধবিমান। মিশরের মতো দেশ এই যুদ্ধবিমান রাখতে চলেছে, অপরদিকে আবার তুরস্ক এই যুদ্ধবিমান ক্রয় করতে চেয়েছিল, কিন্তু সবকিছু হয়েও শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি সম্পূর্ণ হয়নি, কারন এই এস ৪০০ র কারনে। অর্থাৎ তুরস্ক রাশিয়ার থেকে এস ৪০০ ক্রয় করার ফলে আমেরিকা তাদেরকে এই যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে রাজি হয়নি। প্রশ্ন হল ভারতবর্ষ কেন এই যুদ্ধবিমান ক্রয় করছেনা? বা কেন নিজেদের স্কোয়াড্রনে রাখার কথা ভাবছেনা?
F-35 এই মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা এয়ারক্রাফট ( F-22 অবশ্যই প্রথম ) এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিশ্বের বহু দেশ প্রচুর পরিমাণে F-35 অর্ডার করছে সুতরাং এর ক্লাস নিয়ে প্রশ্ন করার কোনও জায়গা নেই। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা রয়েছে। হ্যাঁ F-35 এর অত্যাধিক দাম, এর স্টেলথ কোটিং এ প্রচুর খরচ হয় একথা ঠিক, কিন্তু এগুলো তেমন সমস্য নয় কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে এর প্রধান সমস্যা S-400.। আরো বলতে গেলে IFF টেকনোলজি, IFF বা আইডেন্টিফিকেশন ফ্রেন্ড অর ফো রেডার বেসড এমনই এক সিস্টেম যা শত্রু বিমান কে চিহ্নিত করতে ব্যবহার হয়।
সোজা কথায়, ধরুন চীনের ও সুখোই ৩০ আছে, ভারতবর্ষের ও আছে। যদি ভারতের আকাশে উভয় দেশের সুখোই ৩০ এর মধ্যে ডগফাইট হয় তাহলে ভারতবর্ষের এয়ারডিফেন্স বুঝবে কি ভাবে যে কোনটা ভারতের সুখোই ৩০?. উত্তরটা খুব সোজা প্রত্যেক দেশের ফাইটার জেটের একটা কোড থাকে যা সেই দেশের এয়ারডিফেন্স সিস্টেমে ইনস্টল করা থাকে বা ডাটা লিংক করাতে হয় যার দ্বারা নিজেদের ও শত্রু বিমানের পরিচয় বোঝা যায়, একেই IFF টেকনোলজি বলে।
ভারতের S-400 সহ সমস্ত এয়ারডিফেন্সে ভারতের সুখোই ৩০, মিরাজ, তেজস রাফায়েল সহ সমস্ত বিমানের কোড দেওয়া থাকবে। আপনারা কি জানেন ভারতের S-400 সিস্টেমে রাফায়েল এর কোড ইনস্টল নিয়ে ফ্রান্স ও রাশিয়া কাজ করছে। সঠিক ব্যবহার না হলে IFF টেকনোলজি কতটা ক্ষতি করতে পারে, কিছুমাস আগে বুদগামে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স এর একটা MI-17 হেলিকপ্টার ইন্ডিয়ান স্পাইডার স্যাম ই ভুল করে শুটডাউন করে, যাতে হেলিকপ্টারে থাকা ৬ জন শহীদ হয়ে যান। স্পাইডার স্যাম বুঝতে পারে নি এটা ইন্ডিয়ান হেলিকপ্টার। বুঝতে পারছেন IFF কী?? এটা মজার জিনিস।
ঠিক এখানেই সমস্যা F-35 ও F-15EX এর সাথে। আমেরিকা কোনদিনই এই দুটি বিমানের কোড ভারত কে দেবে না যা S-400 এ ইনস্টল করা হবে কারন টা খুব সোজা। ভারতের S-400 এর সফটওয়্যার আপগ্রেড একমাত্র রাশিয়াই করতে পারবে সুতরাং রাশিয়া খুব সহজেই F-35 ও F-15EX এর কোড পেয়ে যাবে, যা আমেরিকা কোনদিনই চাইবে না। আমেরিকার জায়গার ভারত হলেও তাই করত, কেউই তার শত্রু কে কোড দেবে না। সুতরাং F-35 বা F-15EX ফ্রেন্ডলি ফায়ার বা ভারতের S-400 দ্বারা শুট ডাউন হবার সম্ভবনা রয়েছে। F-15EX এর শুটডাউন হবার সম্ভবনা ১০০% কিন্তু F-35 এর ৫০-৫০. কারন এখনও অনেকেই জানেনা না S-400 এর রেডার F-35 কে ডিটেক্ট করতে পারে কিনা, সুতরাং রিস্ক থেকেই যায়। আর যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যায় ভারত F-35 ক্রয় করল, কিন্তু তাকে কার বিরুদ্ধে কাজে লাগাবে??
কারন ভারতবর্ষের চীন ও পাকিস্তান সীমান্তে S-400 থাকবে সুতরাং সেখানে F-35 অপারেশনাল রাখলে শুটডাইনের সম্ভবনা বেশী। তাহলে F-35 কে S-400 এর রেঞ্জের বাইরে রাখতে হবে।। প্রধান শত্রু পাকিস্তান চীন সেখানেই যদি F-35 ব্যবহার করতে না পারা যায় তাহলে ক্রয় করে কি লাভ? বরং নেভির জন্য কিছু F-35B ক্রয় করে এয়ারফোর্স এর রাফায়েল ও তেজস নিয়ে পুরো ফোকাস আমকার উপর করা হোক এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। এর যার জন্য ভারত প্রথম থেকেই F-35 এর উপর আগ্রহ দেখায়নি। পুরো ব্যাপারটাই একজন সামরিক বিশেষজ্ঞের।